দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রতি তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে যাওয়া ভারত ও পাকিস্তান অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা এই অঞ্চলে নতুন করে শান্তি এবং স্থিতিশীলতার আশা জাগিয়েছে।
পাকিস্তান শনিবার (১০ মে) বিকালে ঘোষণা করেছে যে তাদের আকাশসীমা এখন থেকে সকল রকমের বাণিজ্যিক ও বেসামরিক ফ্লাইটের জন্য উন্মুক্ত।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলি, বিমান হামলা ও সামরিক উত্তেজনা চলছিল, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছিল। আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও কূটনৈতিক চাপের মুখে অবশেষে দুই দেশের সামরিক নেতৃত্ব শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা) থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পাকিস্তানের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পরপরই আকাশসীমা উন্মুক্ত করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার আকাশপথে বাণিজ্যিক যোগাযোগ পুনরায় স্বাভাবিক করতে বড় রকমের পদক্ষেপ। এতে কেবল ভারত-পাকিস্তান নয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির পেছনে প্রায় তিন ডজন দেশের সক্রিয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রয়েছে। তিনি বিশেষভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ভূমিকাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ধন্যবাদ জানান, যিনি সর্বপ্রথম যুদ্ধবিরতির তথ্য প্রকাশ করেন।
ইসহাক দার বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময়ই আঞ্চলিক শান্তির পক্ষে কাজ করেছে, তবে তা আমাদের সার্বভৌমত্বের বিনিময়ে নয়।’
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) ভারতীয় সমকক্ষকে ফোন করে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি চূড়ান্ত করেন।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে যে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে সব ধরনের যুদ্ধ ও সামরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
চুক্তির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও পরবর্তী সমন্বয়ের জন্য সোমবার (১২ মে) দুপুর ১২টায় দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে পুনরায় আলোচনা হবে।