ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভারতে ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবায় প্রাণ গেলো ১৯ জনের

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৩ পিএম

ভারতের কেরালা রাজ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী ‘ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবা’ সংক্রমণ। এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে ৬৯ জন আক্রান্ত ও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি দুর্লভ কিন্তু প্রায় অবশ্যম্ভাবী প্রাণঘাতী রোগ, যার নাম প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনজোএনসেফালাইটিস (PAM)।

Naegleria fowleri নামে এক ধরনের মাইক্রোস্কোপিক অ্যামিবা সাধারণত উষ্ণ ও অস্থির তাজা পানিতে (যেমন- পুকুর, নদী, জলাশয়) বাস করে। পানি নাক দিয়ে প্রবেশ করলে এই অ্যামিবা মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এবং মস্তিষ্কে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায়। মাত্র ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

সাধারণত একক জলসূত্র থেকে এই রোগ ছড়ালেও, এবারের কেসগুলো বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন স্থানে ঘটছে। ফলে রোগ নিয়ন্ত্রণ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ভীণা জর্জ NDTV-কে বলেন, গত বছরের মতো এবার কোনো নির্দিষ্ট জলসূত্র নয়, বরং বিচ্ছিন্নভাবে কেস আসছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।

প্রাথমিকভাবে এই সংক্রমণের লক্ষণগুলো সাধারণ মেনিনজাইটিসের মতোই-

  • উচ্চ জ্বর
  • মাথাব্যথা
  • ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া
  • বমি
  • বিভ্রান্তি
  • খিঁচুনি

একবার লক্ষণ প্রকাশ পেলে সংক্রমণ দ্রুত মারাত্মক হয়ে ওঠে। ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবার কোনো টিকা নেই, আর চিকিৎসার সুযোগও সীমিত। তাই সচেতন থাকাই মূল প্রতিরক্ষা।

স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে কিছু পরামর্শ-

  • উষ্ণ, অস্থির ও তাজা পানিতে (পুকুর, নদী, ঝিল) সাঁতার কাটা এড়িয়ে চলুন
  • নাক দিয়ে পানি যাতে ঢুকে না যায়, সেদিকে সতর্ক থাকুন
  • বাসার আশপাশের পানির ট্যাংক পরিষ্কার ও ক্লোরিনযুক্ত রাখুন
  • সাঁতার কাটার সময় নাক বন্ধ রাখতে মাস্ক ব্যবহার করুন
  • পানিতে ডুব দিলে সেডিমেন্ট বা তলানির মাটি নাড়াচাড়া এড়িয়ে চলুন
  • সাঁতার বা ঝরনায় গোসলের পর অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসা নিন

PAM রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন। কেরালা সরকার মিল্টেফোসিন নামের একটি অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধ ব্যবহার করছে। তবে তাতেও সফলতার হার খুব কম। আক্রান্তদের বেশিরভাগই মারা যাচ্ছেন।

৬৯টি নিশ্চিত আক্রান্ত কেস এবং ১৯টি মৃত্যু কেবল একটি রাজ্যে এটি একটি বড় বিপদ সংকেত। এ ধরনের সংক্রমণ প্রথমদিকে শনাক্ত করা কঠিন, তবে সচেতন থাকলে এড়ানো সম্ভব। পরিষ্কার পানি, সচেতনতা ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসা গ্রহণই পারে জীবন বাঁচাতে। সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন। উষ্ণ ও অস্থির তাজা পানিতে অপ্রয়োজনে স্নান বা ডুব দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

DR/MMS
আরও পড়ুন