দক্ষিণ ভারতের কেরালায় মস্তিষ্কখেকো জীবাণু ‘ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরি’র সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ বছর এখন পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৭০ জন এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু থেকে প্রবীণ সবাই রয়েছেন।
ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরি বা মগজখেকো অ্যামিবা মিষ্টি পানিতে বাস করে। এটি সাধারণত নাক দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়। মস্তিষ্কের কোষ-টিস্যু খেয়ে এটি প্রাণঘাতী রোগের সৃষ্টি করে।
কেরালায় ২০১৬ সাল থেকে এই রোগের ঘটনা ধরা পড়ছে। তবে আগে বছরে মাত্র এক বা দুইটি সংক্রমণ হত, যা প্রায় সবসময় প্রাণঘাতী ছিল। বিশ্বজুড়ে ১৯৬২ সাল থেকে মাত্র ৪৮৮ জন ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরি রোগী শনাক্ত হয়েছে, যেখানে ৯৫ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে।
কেরালার প্রায় ৫৫ লাখ কুয়া ও ৫৫ হাজার পুকুর রয়েছে, যেগুলো থেকে সাধারণ মানুষ পানি সংগ্রহ করেন। অনেক জায়গায় পানির দূষণ বৃদ্ধির ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, আধুনিক পরীক্ষাগারে দ্রুত শনাক্তকরণ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ওষুধ ও স্টেরয়েড মিশ্রণের প্রয়োগে কিছু রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে।
সরকারিভাবে কেরালায় ২৭ লাখ কুয়া ক্লোরিন দিয়ে দূষণমুক্ত করার অভিযান শুরু করা হয়েছে। এছাড়া পুকুরে সাঁতার ও গোসল নিষিদ্ধ করে সতর্কতামূলক বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। সুইমিং পুল ও জলাধার নিয়মিত ক্লোরিনেশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনগণকে সচেতন করতে ‘নাকে প্লাগ ব্যবহার করা’, ‘অপরিশোধিত পানি এড়িয়ে চলা’ এবং ‘ঝুঁকিপূর্ণ পানির কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখা’ বিষয়গুলো প্রচার করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধি, দীর্ঘ গ্রীষ্মকাল এবং পানির দূষণ অ্যামিবার বিস্তার বাড়াচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন। কেরালায় রোগীর সংখ্যা বাড়লেও ভবিষ্যতে এটি অন্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে
ভারতে ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবায় প্রাণ গেলো ১৯ জনের
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাণী মশা