যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি (এনএসএ) ও ইউএস সাইবার কমান্ডের প্রধান জেনারেল টিমোথি হফকে বরখাস্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এনএসএ ও হোয়াইট হাউজের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বড় ধরনের পরিবর্তনের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডেমোক্র্যাটরা এই সিদ্ধান্তকে বিরক্তিকর বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, এটি জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। জেনারেল হফকে কেন বরখাস্ত করা হলো তা স্পষ্ট নয়, তবে এই সিদ্ধান্তের আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ডানপন্থি কর্মী লরা লুমারের বৈঠক হয়েছিল বলে জানা গেছে।
লুমার ট্রাম্পকে তার এজেন্ডাকে সমর্থন না করা কিছু কর্মীকে বরখাস্তের পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এক্স (টুইটার) পোস্টে লুমার দাবি করেন, জেনারেল হফ ও তার সহকারী ওয়েন্ডি নোবেল ট্রাম্পের প্রতি অনুগত ছিলেন না। তাই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ট্রাম্প লুমারের ভূমিকা অস্বীকার করেছেন।
বরখাস্তের খবর প্রকাশের আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি অনুগত নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে দেবেন। এয়ারফোর্স ওয়ানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সবসময় এমন লোকদের ছাঁটাই করব যাদের আমরা পছন্দ করি না, যারা সুবিধা নেয় বা অন্য কারও প্রতি অনুগত।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল (এনএসসি) থেকে কমপক্ষে তিনজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টর ব্রায়ান ওয়ালশ, লেজিসলেটিভ অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ডিরেক্টর থমাস বুড্রি এবং টেকনোলজি ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর ডেভিড ফেইথ।
ডেমোক্র্যাট নেতারা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। হাউজ ইন্টেলিজেন্স কমিটির র্যাংকিং মেম্বার জিম হাইমস বলেছেন, জেনারেল হফ একজন সৎ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া নেতা ছিলেন। আমার আশঙ্কা, এই গুণগুলোই তাকে এই প্রশাসনে বরখাস্তের কারণ হয়েছে।
গত মাসে এনএসসি নিয়ে একটি বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, যখন ইয়েমেনে সামরিক অভিযান নিয়ে সিগন্যাল গ্রুপে এক সাংবাদিককে ভুল করে যুক্ত করা হয়। জেনারেল হফ সেই গ্রুপে না থাকলেও গত সপ্তাহে ক্যাপিটল হিলে এই তথ্য ফাঁস নিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
এদিকে, পেন্টাগনের ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, ডিফেন্স সেক্রেটারি পিট হেগসেথের সিগন্যাল ব্যবহার ও বিভাগের নীতিমালা মেনে চলা হয়েছে কিনা তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফ্লোরিডায় এক ইভেন্টে লুমারকে ‘মহান দেশপ্রেমিক’ ও ‘অত্যন্ত শক্তিশালী ব্যক্তি’ বলে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, লুমার সুপারিশ করেন... কখনও কখনও আমি সেই সুপারিশ শুনি। আমি সবার কথা শুনি, তারপর সিদ্ধান্ত নেই।
লুমার বিবিসিকে বলেন, তার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের বিস্তারিত প্রকাশ করা অনুচিত হবে। এটি একটি গোপন বৈঠক ছিল। হোয়াইট হাউজে এখনও তথ্য ফাঁসকারী রয়েছেন, এটি লজ্জার বিষয়।
এই ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত চললেও এটির তদন্তে অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির কোনও ভূমিকা নেই বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
