ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

পাবলিক টয়লেটে অফিস স্থানান্তর, ক্ষোভে দলিল লেখা বন্ধ

আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৩ এএম

কুমিল্লার তিতাসে পাবলিক টয়লেটে নকলনবিশদের কক্ষ স্থানান্তর করায় ১৫ দিন ধরে দলিলের নকল সরবরাহ বন্ধ রয়েছেভোগান্তিতে পড়েছেন দলিলের নকল কপির জন্য আবেদনকারী প্রায়হাজার গ্রাহকপাবলিক টয়লেটে নকলনবিশদের কক্ষ স্থানান্তরের বিষয়টি অনলাইনে ভাইরাল হলে সাব-রেজিস্ট্রারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। দলিলের নকল লেখা বন্ধ রাখায় একজন নকলনবিশকে শোকজ করেছে জেলা রেজিস্ট্রার।

সরেজমিন দেখা গেছে, চারতলা ভবনের নিচতলার দক্ষিণ সারির অফিসের জন্য চারটি কক্ষ রয়েছে। পশ্চিম দিকের পাবলিক টয়লেটের পরে চারটি কক্ষের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস, সাব-রেজিস্ট্রারের এজলাস, সিঁড়ি-সংলগ্ন মোটরসাইকেল গ্যারেজ ও নকলনবিশদের কক্ষ। নকলনবিশদের কক্ষে পার্টিশন দিয়ে ছোট্ট একটি কক্ষ, এটি সাব-রেজিস্ট্রারের খাস কামরা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

গত জুন মাসে মুক্তিযোদ্ধারা নিজস্ব ভবনে চলে যান, মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা গ্যারেজ তৈরি হওয়ায় দুটি কক্ষ খালি হয়। পরে জুন মাসে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় দুটি কক্ষের মধ্যে একটি প্রাণিসম্পদ অফিসের মিনি ল্যাব ও আরেকটি সাব রেজিস্ট্রারের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। এদিকে, সাব রেজিস্ট্রার নকলনবিশদের কক্ষটি খালি করে পাশের পাবলিক টয়লেটে স্থানান্তর করেন। যে কক্ষটিতে নকলনবিশরা এতদিন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন তার মাঝের দেয়াল পরিবর্তন করে সাব রেজিস্ট্রার নিজের জন্য টয়লেট নির্মাণ করেন। পাবলিক টয়লেটে স্থানান্তর করায় গত ১৬ জুলাই থেকে দলিলের নকল লেখা বন্ধ।

একাধিক নকলনবিশ জানান, আগের কক্ষটি অনেক বড় ছিল। তারপরও সেখানে ১৫ জন কাজ করা কঠিন ছিল। তাদের দাবি ছিল কক্ষ বড় করে দেওয়ার, কিন্তু সাব রেজিস্ট্রার পাবলিক টয়লেটে স্থানান্তর করেছেন। কক্ষটিতে ৫ জন বসাই অসম্ভব, সেখানে ১৫ জন কীভাবে কাজ করবেন? তাই দলিলের নকল লেখা বন্ধ রেখেছেন। তাদের অভিযোগ, জেলা সাব রেজিস্ট্রার মানবিক দিক না দেখে একজনকে শোকজ করেছেন। তারা জানান, গত ১৫ দিনে প্রায় ২ হাজার দলিলের নকল চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে।

উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মেহেদী হাসান সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের মাধ্যমে দলিলের নকল গ্রাহকের কাছে যায় বিধায় এটা নিয়ে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আমরা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের অনুরোধ করেছি।’

সাব রেজিস্ট্রার শরীফুল ইসলামের ভাষ্য, তার অফিসের নকলনবিশরা টয়লেটটি ব্যবহার করতেন এবং এতে অফিসের অনেক কাগজপত্র ছিলএটি তালাবদ্ধ থাকতএখানে নকলনবিশ ১৫ জনের মধ্যে ১১ জন নারীভবনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে গিয়ে শৌচাগারে তাদের সমস্যা হতোতাই কক্ষটি সংস্কার করে তাদের স্থানান্তর করা হয়েছিল

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমাইয়া মমিন জানান, ভবনের নিচতলার দুটি কক্ষ খালি হওয়ায় প্রাণিসম্পদ অফিসসাব রেজিস্ট্রার অফিসকে বিধিমতো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। পাবলিক টয়লেট অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহারের জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সাব রেজিস্ট্রারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

khk
আরও পড়ুন