ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ব্যাটারিচালিত রিকশার দখলে হাসপাতাল

আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১২:০৬ পিএম

রাজবাড়ী জেলাবাসীর একমাত্র আধুনিক চিকিৎসার ভরসাস্থল রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল। বর্তমানে হাসপাতালটির প্রধান ফটক, জরুরি বিভাগসহ পুরো কম্পাউন্ডই রয়েছে অটোরিকশার দখলে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে জরুরি বিভাগের রোগী আনা নেওয়া। বৃহস্প‌তিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।

জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল জেলার ৫ উপজেলার ১২ থেকে ১৪ লাখ মানুষের একমাত্র আধুনিক চিকিৎসার আশ্রয়স্থল। ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা থাকে বেশি। এছাড়া প্রতিদিন আউটডোরে ১ হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। ফলে আউটডোর ও জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ থাকে বেশি। রোগীর স্বজন জামিলুর রহমান, আলমগীর হোসেন, নাজমা বেগমসহ অনেকে বলেন, পুরো হাসপাতাল এখন অটোরিকশার দখলে। বিশেষ করে জরুরি বিভাগের সামনে রাস্তার পাশে রিকশাগুলো এমন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, তাতে রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য বাহন ঢোকা ও বের হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেক সময় সিরিয়ালও হয়ে যায়। কিন্তু এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নাই, তারা যেন দেখেও দেখেন না এসব। 

তারা আরো বলেন, অটোচালকদের কিছু বললে তারা উল্টো কথা বলে এবং সরতে বললেও সরে না। জরুরি রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি রোগী পরিবহন করা যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া উচিত না। অটোরিকশা চালক আইয়ুবসহ কয়েকজন বলেন, ভাড়া পাওয়ার আশায় আমরা হাসপাতালের ভেতরে থাকি। আমাদের কারণে কোনো সমস্যা হয় না এবং আমরা রাস্তা ছেড়ে এক পাশে সিরিয়াল দিয়ে থাকি। কিন্তু রিকশাওয়ালারা কোনো কথা না শুনে জরুরি বিভাগের সামনের রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে গাড়ি আসা যাওয়ার সমস্যা হয়। তাছাড়া হাসপাতালে ভেতর আমাদের আসা যাওয়া নিয়ে কোনো বিধি নিষেধ নেই।

রিকশাচালক চান মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, মিলন মিয়াসহ কয়েকজন বলেন, আমরা গরিব মানুষ, রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। ভাড়া পাওয়ার আশায় হাসপাতালের ভেতর আসি। তবে ভেতরে আসতে আমাদের কেউ বাধা দেয় না। জরুরি বিভাগের সামনে রাস্তায় আমরা সিরিয়াল দিয়ে রিকশা রাখলেও অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ শুনলেই নিজ থেকে রিকশা সরিয়ে দেই এবং রোগীদের আসা যাওয়ার সহযোগিতা করি। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে, হাসপাতালের মূল গেটে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর থেকে গেট মুক্ত রাখা হয়েছে। তারপরও হাসপাতালে ভেতরে প্রবেশ করা অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা, অটোরিকশা চালকদের নির্দেশনা দেওয়া আছে রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটুকু হাসপাতালে ভেতর অবস্থান করবে। কিন্তু কেউ কথা শুনছেন না। এদের মধ্যে সচেতনতার অভাব আছে। আর জনবল সংকট থাকায় গেটে সার্বক্ষণিক লোক নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাউকে দিলে তার গায়ে পর্যন্ত হাত তোলা হচ্ছে। তারপরও আবারো চেষ্টা করা হবে। এতে কাজ না হলে আইনের প্রয়োগ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

আরও পড়ুন