বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পে উপ-প্রকল্প মূল্যায়নে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ।
হিট প্রকল্পের সাব-প্রজেক্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং বাস্তবায়নে চুক্তি সই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার কমিশনের অডিটোরিয়ামে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রফেসর ফায়েজ বলেন, হিটের বিভিন্ন সাব প্রজেক্ট প্রকল্প মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে সব ধরনের উদ্যোগ ইউজিসি নিশ্চিত করেছে। প্রকল্প মূল্যায়নের প্রতিটি ধাপের খোঁজ তিনি নিয়মিত নিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, ইউজিসিতে যোগদানের পূর্বে আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ চাকরি জীবনের অর্জিত সম্মান কোনো কারণে বিনষ্ট হোক, তা আমি কোনোভাবেই চাইবো না।
তিনি আরও বলেন, হিট প্রকল্পে ব্যক্তিগতভাবে উপ-প্রকল্প প্রস্তাব জমাদানের কোনো সুযোগ নেই। উপ-প্রকল্প প্রস্তাবসমূহ শিক্ষকরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটি ও উপাচার্যের অনুমোদনের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন। ফলে প্রকল্প প্রস্তাব নির্বাচনে আবেদনকারীর রাজিনৈতিক আদর্শ দেখা ইউজিসির এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। নিরপেক্ষ রিভিওয়ার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্য শিক্ষক ও গবেষকদের মাধ্যমে প্রকল্প মূল্যায়ন করা হয়েছে। উপ-প্রকল্প নির্বাচনে দেশ ও জাতির স্বার্থ বিবেচনা করা হয়েছে।
এ সময় প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, রিভিউয়ারদের যোগ্যতা, প্রজেক্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক প্রভাব সংক্রান্ত প্রশ্ন উঠে আসে।
এর জবাবে ইউজিসি সদস্য ড. তানজিম উদ্দিন বলেন, আমাদের এখানে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। বামপন্থী বা ডানপন্থী—কারো রাজনৈতিক পরিচয় রিভিউ বা প্রজেক্ট নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। এটি শুধুমাত্র একাডেমিক প্রক্রিয়া।
বোর্ডে থাকা ব্যাক্তিদের যোগ্যতা ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পে রিভিউ কমিটিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় সব শিক্ষাবিদই পিএইচডি ধারক। যেসব ক্ষেত্রে ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধি ছিলেন, সেখানে প্রায়শই পিএইচডি না থাকা স্বাভাবিক। তবে কমিটি কঠোরভাবে নির্বাচিত এবং শুধুমাত্র প্রফেশনাল যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, রিভিউয়াররা নিজেরা একাডেমিক কমিটির সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিচিতির ভিত্তিতে কোনো প্রভাব রাখা হয়নি। প্রতিটি প্রজেক্টের রিভিউ স্কোর এবং মন্তব্যের ভিত্তিতেই প্রজেক্ট নির্বাচন বা বাদ দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান, প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। হিট-এর প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও উপ-প্রকল্প নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিকও তুলে ধলেন।
উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট নির্বাচিত ১৫১টি উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে ইউজিসির চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে পাঁচ বছর মেয়াদি হিট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ বহন করবে বিশ্বব্যাংক।
