জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পর আরও চারটি প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্বরে চারটি প্যানেলের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন শরণ এহসান।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে প্রথম ভোট বয়কট করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। পরবর্তীতে সম্প্রীতির ঐক্য, সংশপ্তক পর্ষদ, অঙ্গীকার পরিষদ, ছাত্র ফন্ট্র একাংশের প্যানেল ভোট বয়কটের ঘোষণা দেয়। এই দাবিতে ৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীও একাত্মতা জানিয়েছেন।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বিএনপিপন্থী ৩ শিক্ষক। তাদেরই একজন শিক্ষক ড. নাহরীন ইসলাম খানের সঙ্গে কথা বলেছে গণমাধ্যমকর্মীরা।
এসময় ড. নাহরীন ইসলাম খান বলেন , ভোট প্রদানের পর আঙুলে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করার কথা থাকলেও যে কালি দেয়া হচ্ছে তা উঠে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের বরাতে কালি ব্যবহার না করারও অভিযোগ তোলেন এই শিক্ষক।
তিনি বলেন, ভোটের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে হাতে ব্যালট পেপার ও হাতে কালি দেয়ার কথা। এরপর বাক্সে ভোট প্রদান। কিন্তু ভোট দেয়ার পর এক্সিট করার সময় বাইরে থেকে কেউ হাতে কালি লাগিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে নির্বাচনের অর্ধেক সময় পার হওয়ার পর কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার একটু আগে মওলানা ভাসানী হলের গেস্ট রুমে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন ছাত্রদল সমর্থিত জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। প্যানেলের অভিযোগ, শিবির সমর্থিত প্যানেলকে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জামায়াতের সাথে আঁতাত করেছে।
অন্যদিকে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা ও সামগ্রিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’। নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ছাত্রদল ভোট বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ আদিব।
এছাড়া কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’। বিকেলে জাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ন্যক্কারজনক ভূমিকা ও ছাত্র শিবিরকে ভোট জালিয়াতিতে সহযোগিতার প্রতিবাদে তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়।
জাকসু নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ১১ হাজার ৮৯৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১০ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রায় ৫৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ১০২ জন।
এবারের নির্বাচনে ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৮ প্রার্থী। নির্বাচনে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট ৮টি প্যানেল অংশগ্রহণ করে।
ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা
ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষে আহত ২৫
ভোটারের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি ব্যালট ছাপানোর অভিযোগ
হাতে গণনা হবে জাকসুর ভোট