ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বন্ধের পথে ঐতিহাসিক সিনেমা হল ‘মণিহার’

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৯ এএম

যশোরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল আবারও বন্ধের পথে। দেশের সর্ববৃহৎ ও একসময় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিনেমা হলটি দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চললেও এবার হয়তো চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত মণিহার সিনেমা হলে দর্শকআসনের সংখ্যা এক হাজার ৪৩০টি। তবে সিনেমার সংকট আর দর্শকহীনতায় বছরের বেশিরভাগ সময় আসনগুলো খালি পড়ে থাকে। সর্বশেষ কুরবানি ঈদে মাত্র তিনটি নতুন সিনেমা পেলেও এরপর থেকে নতুন কোনো ব্যবসাসফল ছবি পায়নি হল কর্তৃপক্ষ। ফলে পুরোনো সিনেমা বারবার চালাতে হচ্ছে তাদের।

মণিহারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মিঠু বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে দুটি নতুন সিনেমা পেতাম, এখন মাসেও একটি পাই না। আর্ট ফিল্ম দিয়ে হলে দর্শক আনা যায় না। লোকসানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলার চেয়ে হল বন্ধ করাই ভালো। তবে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে মণিহার সিনেপ্লেক্স হিসেবে চালু রাখা হবে।

তিনি আরও জানান, প্রতি মাসে শুধু বিদ্যুৎবিল আসে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে ২৫ জন কর্মচারীর বেতন ও সিনেমা কেনার খরচ। এই লোকসান মেটাতে হচ্ছে হলের সঙ্গে থাকা হোটেল ও অন্যান্য স্থাপনা থেকে পাওয়া আয় দিয়ে।

মণিহারের ব্যবস্থাপক ফারুক আহমেদ বলেন, ভালো পরিবেশ দিয়েও টিকে থাকা সম্ভব নয় যদি সিনেমা না থাকে। মাসে অন্তত একটি ভালো সিনেমা থাকলেও হলে টিকে থাকা যায়। এখন সিনেমার অভাবে সব মালিকই ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।

সিনেমা বিশেষজ্ঞদের মতে, ৯০-এর দশকের শেষভাগ পর্যন্ত দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৩০০টির বেশি। বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৭০-৭৫টিতে, যার অনেকগুলোই চালু নেই। এবার বন্ধ হতে যাচ্ছে ৪২ বছরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল।

উল্লেখ্য, হলটির নকশা করেছিলেন স্থপতি কাজী মোহাম্মদ হানিফ এবং সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল কিংবদন্তি শিল্পী এসএম সুলতানের তত্ত্বাবধানে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মণিহার সিনেমা হলে দর্শকদের ভিড় থাকত বছরজুড়ে। সেসময় দেশের নানা প্রান্ত থেকে সিনেমাপ্রেমীরা দলে দলে ছুটে আসতেন এই হলে সিনেমা দেখতে।

NB/AHA
আরও পড়ুন