চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এবং হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ওএমআর পদ্ধতিতে হবে। নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, নিরাপদ এবং নিরপেক্ষ করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ভোটগ্রহণ হবে ১৫ অক্টোবর (বুধবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে মোট ৬১টি ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার অংশ নিতে পারবেন। এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ২৬টি পদে ৪১৫ জন প্রার্থী এবং হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদে ৪৯৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রতিটি ভোটকক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন একজন প্রিজাইডিং অফিসার, একজন শিক্ষক ও একজন কর্মকর্তা। তাদের সহায়তায় থাকবেন দুইজন কর্মচারী, একজন রোভার স্কাউট ও একজন বিএনসিসি সদস্য। প্রতিটি প্রার্থী প্রতি কেন্দ্রে একজন করে পোলিং এজেন্ট রাখতে পারবেন।
ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও ব্যাটারি ব্যাকআপে চালু থাকবে। প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমোদন ছাড়া কেউ কোনো কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রার্থীরা সরাসরি কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারলেও তাদের পোলিং এজেন্ট উপস্থিত থাকতে পারবে।
ভোট শুরু হওয়ার আগে ব্যালট বাক্স উপস্থিত সবার সামনে খোলা হবে এবং খালি আছে কি না যাচাই করা হবে। ভোট শেষে অব্যবহৃত ব্যালট সিলমোহরসহ ফেরত পাঠানো হবে। প্রতিটি ব্যালট দুইবার স্ক্যান করা হবে- প্রথমে ডিন অফিসে, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি অফিসে। দুই ফলাফল মিললে সেটিই চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, রিজার্ভ ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স, গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট থাকবে। প্রয়োজনে বিজিবি ও সেনাবাহিনীও সহায়তায় নামতে পারে। ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর আগে প্রত্যেক ভোটারকে তিন ধাপে তল্লাশি করা হবে।
শাটল ট্রেন ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী বাসের রুটে কঠোর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থাকবে। নির্বাচনের দিন পাঁচ ভবনে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আশা করছি শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীলভাবে ভোটে অংশ নেবে এবং কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন, কমিশনার ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকীসহ কমিশনের অন্যান্য সদস্য ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
চাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা