শক্তিশালী পাসপোর্টের সেরা ১০ থেকে বাদ পড়েছে দাপুটে যুক্তরাষ্ট্র! যে পাসপোর্ট এক যুগ আগেও ছিল বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী, আজ সেটা জায়গা হারিয়েছে এশিয়ার দেশগুলোর কাছে। এক সময় যেখানে আমেরিকান পাসপোর্ট মানেই ছিল ওপেন গেট এখন সেই গর্বিত মর্যাদা অনেকটাই ম্লান।
হেনলি পাসপোর্ট সূচকের সর্বশেষ তালিকা বলছে, ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নেমে এসেছে ১২তম স্থানে মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে। গত বছর যেখানে তারা ছিল সপ্তম স্থানে। এখন এই পাসপোর্টে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যায় ১৮০টি দেশে। অন্যদিকে, তালিকার শীর্ষে রাজত্ব করছে পূর্ব এশিয়ার তিন দেশ—সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। তাদের নাগরিকরা যথাক্রমে ১৯৩, ১৯০ ও ১৮৯টি দেশে ভিসামুক্তভাবে যেতে পারেন। জার্মানি, লুক্সেমবার্গ ও ইতালি আছে যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ রাজনৈতিক ও নীতিগত পরিবর্তন। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসননীতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অভাবই এই পতনের বড় কারণ।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের চেয়ারম্যান ক্রিশ্চিয়ান কেলিন বলেছেন, এই পরিবর্তন শুধু র্যাঙ্কিং এ নয়—এটা সফট পাওয়ার বা বৈশ্বিক প্রভাবের দিকেও এক বড় ইঙ্গিত। তার মতে, যে দেশগুলো উন্মুক্ততা ও সহযোগিতায় বিশ্বাস রাখছে, তারাই এগিয়ে যাচ্ছে, আর যারা পুরনো সুবিধার ওপর ভরসা করছে, তারা পিছিয়ে পড়ছে।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের বিশ্লেষক অ্যানি ফোরজাইমার মনে করেন, ট্রাম্প পুনর্নির্বাচনের আগেই মার্কিন নীতি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিল। সেই বিচ্ছিন্ন মনোভাবেরই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এখন পাসপোর্টের র্যা ঙ্কে।
হেনলির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা এখন ভিসা ছাড়াই ১৮০টি দেশে যেতে পারেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নিজে মাত্র ৪৬টি দেশের নাগরিকদের এমন সুবিধা দেয়। এই একতরফা নীতির কারণে ব্রাজিল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণ সুবিধা বাতিল করেছে।
আরেকটি কারণ হলো বাড়তি খরচ। ইলেকট্রনিক সিস্টেম ফর ট্রাভেল অথরাইজেশন বা ইএসটিএর ফি ২১ ডলার থেকে বেড়ে ৪০ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে, চীন, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলো নতুন নতুন ভিসা ছাড়ের সুবিধা দিলেও যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়েছে। এমনকি ভিয়েতনামও তাদের সদ্য প্রকাশিত ভিসামুক্ত তালিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে দিয়েছে।
