ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ইসির কাছে জামায়াতের ১৮ দফা দাবি

আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ১৮ দফা দাবি পেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বিশেষ করে গণভোটের বিষয়ে কমিশনকে জানিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে বেলা ১২টা ১০ মিনিটে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতে ইসলামীর সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল। এতে নেতৃত্ব দেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররাও এতে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দুই ঘণ্টার সভা শেষে দুপুর সোয়া ২টা নাগাদ মিয়া গোলাম পরওয়ার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান। 

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনের চার মাস আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্টের প্রবণতা দেখা গেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, যেই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে সেখানে তারা যেন অটল থাকেন।

জামায়াতের ১৮ দফা সুপারিশ হচ্ছে-

১. জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারীর পরেই আগামী নভেম্বরে গণভোটের আয়োজন করতে হবে।

২. উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সর্বশেষ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধিত বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে; অন্য কোনো দলের প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। এই বিধান বহাল রাখতে হবে।

৩. নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত প্রিজাইডিং, পোলিং, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।

৫. সকল ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সামরিক বাহিনীর সদস্য নিয়োগ করতে হবে।

৬. সকল ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৭. বিগত বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া যাবে না; মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের (ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসি) নিয়োগ শতভাগ লটারির ভিত্তিতে দিতে হবে।

৮. রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগে প্রশাসনের অফিসারগণের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. সব ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্বে সামরিক, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

১০. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে নির্বাচনী মাঠ সমতল করা হবে।

১১. সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে; অতীত কালে দলীয় প্রয়োজনে দেওয়া অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে তা সরকারের নিকট জমা করতে হবে।

১২. নির্বাচনী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

১৩. ভোটারদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াত নিশ্চিত করতে নির্বাচনী এলাকার ভেতর ও বহির্ভূত স্থানে সন্ত্রাসী তৎপরতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে দমন করতে হবে।

১৪. ভোটার তালিকায় ভোটারদের ছবি স্পষ্ট না হলে তা সংশোধন করে চিত্রসহ তালিকা পোলিং এজেন্টদের যথাসময়ে সরবরাহ করতে হবে।

১৫. নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং, প্রিজাইডিং অফিসার, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদানের সুযোগ দিতে হবে।

১৬. প্রবাসী ভোটারদের ভোট প্রদানের পদ্ধতি সহজ করতে ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট যেকোনো একটির মাধ্যমে ভোট প্রদানের সুযোগ দেওয়া হোক; রেজিস্টার্ড প্রবাসী ভোটারদের তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোকে যৌক্তিক সময়ে সরবরাহ করতে হবে।

১৭. নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করতে হবে।

১৮. অতীতকালে ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়ে থাকলে অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে সেগুলো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করতে হবে।

SN
আরও পড়ুন