টানা কয়েক দিনের গরমের পর স্বস্তি নিয়ে এলো বৃষ্টি। তবে রাজধানীজুড়ে রাতভর টানা বৃষ্টিপাতে সড়কে ব্যাপক জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাতে শহরের অনেক সড়কেই পানি জমে গেছে। সড়কে গণপরিবহন কম থাকায় কর্মজীবী মানুষ ও সাধারণ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ১টার পর থেকেই ঢাকার আকাশে শুরু হয় মেঘের গর্জন। কিছু সময় পরই শুরু হয় বৃষ্টি। সকালের আলো ফোটার পরও বৃষ্টি থামেনি। বরং কখনো মৃদু, কখনো ঝুম বৃষ্টিতে রাজধানীর বহু নিচু এলাকাকে পরিণত করেছে অস্থায়ী জলাশয়ে। সকাল হতেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তের সড়কে জলাবদ্ধতার দৃশ্য চোখে পড়ে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে, বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রুটে অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচল।
সরেজমিন দেখা গেছে, মিরপুর-১০ হতে কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন পযর্ন্ত সড়কে হাঁটু পানি জমে রয়েছে। এছাড়া কালশী, মতিঝিল, বিজয়নগর, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকার কিছু অংশ এবং ধানমন্ডি এলাকায় পানি জমে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছু স্থানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে থাকায় পথচারীদের হেঁটে চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে।

যদিও আজ সরকারি ছুটি (১ অক্টোবর), তবে সকাল থেকেই অনেকে কাজে কিংবা প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছেন। কিন্তু সড়কে পানি জমে থাকায় বাস বা রিকশা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অনেককে হাঁটতে হয়েছে কাদা-পানির ভেতর দিয়ে। কেউ কেউ আবার পানিতে আটকে পড়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে আবহাওয়াবিদদের মতে, এই বৃষ্টি হঠাৎ কোনো স্বাভাবিক আবহাওয়া নয়। এটি একটি শক্তিশালী মৌসুমি বৃষ্টিবলয়ের অংশ। বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দল (বিডব্লিউওটি) পূর্বেই সতর্ক করেছিল, ‘প্রবাহ’ নামের এই বৃষ্টিবলয়টি ৩০ সেপ্টেম্বর রাত থেকে দেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে প্রবাহটি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকবে। ঢাকা বিভাগেও এর প্রভাব থাকবে উল্লেখযোগ্য। তবে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয় থাকবে এটি। ফলে আগামী কয়েকদিন রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
