ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

নরসিংদীতে হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলায় বর্ষবরণ 

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ এএম

আবহমান বাংলার লোক সাংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। ঐতিহ্যবাহী এ খেলা এখন গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় প্রায়ই উৎসব পার্বনে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বৃদ্ধি ও দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে গ্রামে-গ্রামে আয়োজন করা হতো গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নরসিংদীতে ফেরে অনুষ্ঠিত হয়েছে লাঠি খেলা। স্থানীয় একটি দলের লাঠিয়ালরা এতে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন কসরত দেখিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন।

রবিবার ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের বিকেল বেলায় রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি রহিমা হক চেতনা বিকাশ মহিলা কলেজ মাঠে লাঠি খেলা হয়। গিয়ে দেখা যায়, ঢাক-ঢোল, বাজনা, গান, কাঁসার ঘণ্টার তালে তালে চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাটি দেখতে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী নারী-পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ-শিশুরাও ভিড় করে। খেলার মাঠ পরিণত হয় মানুষের মিলন মেলায়। স্থানীয় দর্শনার্থীরা বহু দিন পরে এ খেলা দেখে বেশ আনন্দিত উচ্ছসিত। লাঠি খেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন সব বয়সী মানুষ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপির সহধর্মিণী কল্পনা রাজিউদ্দিন, রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি, ইউপি চেয়ারম্যান মেসবাহউদ্দিন মৃদুল, সফিউল আজম কাঞ্চন প্রমুখ।  

স্থানীয় ও দর্শনার্থীরা বলছেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন একটি প্রাণবন্ত আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আগামীতেও যেন এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে এমনটিই প্রত্যাশা সবার।

প্রবীণ লাঠিয়ালরা বলছেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাপ-দাদার স্মৃতিস্বরূপ খেলেন। এ খেলার সঙ্গে জড়িত অনেকে খুব গরিব। তারা দুঃখ-দুর্দশায় জীবনযাপন করেন। সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনা। নিয়মিত চর্চা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ খেলাকে আরও বড় পরিসরে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারব। ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া সব খেলা রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

কলেজের অধ্যক্ষ সফিউল আজম কাঞ্চন বলেন, ছোটবেলায় এই লাঠিবাড়ি খেলা দেখতাম। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ এমন আয়োজন। এই দিনে সুন্দর খেলা উপভোগ করলাম। বিদেশি অপসাংস্কৃতির হাত থেকে দেশীয় সাংস্কৃতি রক্ষার জোর দাবি জানান।

MB/AST
আরও পড়ুন