নরসিংদীতে বাউল গানে মুগ্ধ দর্শক-শ্রোতা

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৮ পিএম

নরসিংদীতে শীতের রাতে আধ্যাত্মিক বাউল গানের আসরে হাজারো দর্শক-শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন জনপ্রিয় বাউলশিল্পীদের পরিবেশনা। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাতভর উপজেলার পূর্বহরিপুর চৌরাস্তা মোড়ে আয়োজিত এ আসরে আধ্যাত্মিক গান, মুর্শিদি সুর ও বিচ্ছেদী গানের ঝংকারে সুরভিত হয় পুরো এলাকা। ছন্দ, সুর আর দর্শকের করতালিতে রাতভর উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। 

আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভান্ডারীর উদ্যোগে এবং জালাল ভান্ডারীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই বাউল আসরে পালাক্রমে পরিবেশন করেন দেশবরেণ্য বাউলশিল্পী চন্দ্রা সরকার ও হাবিল সরকার। আসরে হারমোনিয়াম, একতারা, বাঁশি, করতাল, ডুগডুগি, মন্দিরা আর ঢাক-তবলার তালে তালে দুই শিল্পী আসরের শুরুতে পরিবেশন করেন সৃষ্টিকর্তা ও রাসুল (সা.)-এর গুণকীর্তন।

এরপর মুর্শিদি, দেহতত্ত্ব ও বিচ্ছেদী গান পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হতে থাকে। ‘আল্লাহ রাসুল মদিনার ফুলম দয়াল বাবা মাওলানা’, ‘আল্লার নবী মায়ার নবী নুরের নবী গো’, ‘বন্ধু বীনে পাগল মন’, ‘আমি ত ভান্ডারীর পিরিতে মরা’ এমন জনপ্রিয় গানে চারদিক মাতিয়ে তোলেন ভক্ত-অনুরাগীরা।

একটি গানের পর আরেকটি গানের ফাঁকে দুই শিল্পীর যুক্তিতর্ক, কথামালা ও তাৎক্ষণিক সুরের লড়াই দর্শক-শ্রোতাদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেয়। মঞ্চ ঘিরে হাজারো মানুষের সমাগমে পুরো পরিবেশ হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নূর আহাম্মদ চৌধুরী মানিক, রায়পুরা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সুহেল, মুছাপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদ মিয়া মেম্বার, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মেম্বারসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।

স্থানীয়দের ভাষ্যে, শীতের রাতে এমন আধ্যাত্মিক বাউল গানের আসর তাদের মনকে উষ্ণ করেছে। যুবক জয়নাল বলেন, ‘এ রকম আসর এখন খুব একটা হয় না। বাউল গানের মায়া-মুগ্ধতার কথা বড়দের কাছে শুনেছি। আজ সত্যিই অসাধারণ লাগল। এগুলো থেকে অনেক কিছু শেখা যায়।’

বাউলশিল্পীরা বলেন, ‘আগে বাউল গানের যে কদর ছিল, এখন তা অনেকটাই কমে গেছে। শীতের মৌসুমে কিছুটা চাহিদা থাকে। দর্শক-শ্রোতারা আসরে এলে বাউল শিল্পীরা টিকে থাকবে।’

আয়োজক কমিটির সভাপতি আসাদ মিয়া মেম্বার বলেন, ‘লোকসংস্কৃতির মূলধারার বাউল সংগীত বিলুপ্তির পথে। এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ওরশ উপলক্ষে আমরা এ আয়োজন করেছি।’

DR/SN