কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পিরোজপুর সদর উপজেলার কলাখালি গ্রামের সোহেল সরদারের সর্দার অ্যাগ্রো ফার্মে প্রস্তুত রয়েছে ব্যতিক্রমী গরু 'বীর বাহাদুর'। ছয় ফুট উচ্চতার কুচকুচে কালো ‘বীর বাহাদুর’ আট ফুট লম্বা ও ২৫ মন ওজন। গরুটি যেমন বলবান, তেমনি তার তেজ। বলবান এবং নবাবি আচরণের জন্য মালিক সোহেল সর্দার আদর করে নাম রেখেছেন ‘বীর বাহাদুর’।
এরই মধ্যে গরুটি জেলা পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশাল আকৃতির গরুটি দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা ও ব্যবসায়ীরা।

গরুর মালিক সোহেল সরদারের দাবি, এটি জেলার সবচেয়ে বড় গরু। গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে আট লাখ টাকা।
জানা যায়, ‘বীর বাহাদুর’কে ঢাকার একটি হাট থেকে তিন বছর বয়সে শখ করে কিনে আনেন মালিক সোহেল সর্দার। এরপর দীর্ঘ তিন বছর ধরে ফার্মে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালনপালন করা হয়েছে গরুটিকে। বীর বাহাদুরের দৈহিক গঠন যেমন চমকপ্রদ, তেমনি তার স্বভাবও আলাদা। শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান এই গরুটিকে সামলাতে কখনো কখনো লেগে যায় ৫ থেকে ১০ জন লোক। এ খামারে ‘বীর বাহাদুর’সহ গরুর সংখ্যা ১২টি, যা পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন খামারের মালিক। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় বীর বাহাদুর।
ফার্মে ঢুকতে প্রথমেই আলাদাভাবে পরিচর্যা করা হয় তাকে। সারা দিন ফার্মের ভেতরেই কাটে তার। দিন রাত চালিয়ে রাখতে হয় ফ্যান ও লাইট।
বাহাদুরের খাদ্য তালিকায় রয়েছে শুকনো খড়। তাছাড়া খৈল, কলা, ভুসি ও ভুট্টা। তার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন কাঁচা ঘাসও রয়েছে। গরমের মধ্যে তাকে গোসল করানো হয় দিনে দুই থেকে তিনবার।
গরুটির মালিক সোহেল সর্দার বলেন, বীর বাহাদুরের যত্নে কোনো কমতি রাখা হয়নি। সন্তানের মতো লালনপালন করা হয়েছে। ওর গায়ে এক ফোঁটা কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করিনি। গরুটিকে খাওয়ানো হয় শুধু প্রাকৃতিক খাবার ঘাস, খৈল, কলা, ভুসি ও ভুট্টা। কোনো রকম কৃত্রিম ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি। ফলে বীর বাহাদুর এখন সুস্থ, সবল এবং আকর্ষণীয় এক পশুতে রূপান্তরিত হয়েছে। এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য তাকে প্রস্তুত করছি। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এটা আমি বিক্রি করতে চাই। বীর বাহাদুরের ২৫ মণ ওজনের একটি এটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু।

তিনি বলেন, আমি বীর বাহাদুরকে বিক্রির জন্য ৮ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। ইচ্ছা আছে বীর বাহাদুরকে ঢাকার যেকোনো একটি হাটে নিয়ে যাব। তবে ভালো ক্রেতা পেলে বাড়ি থেকে দাম কম-বেশি করে বিক্রি করে দেব। আল্লাহ যাকে রিজিক দিয়েছেন, তিনিই বীর বাহাদুরকে নিয়ে যাবেন।
গরুটির পরিচর্যাকারী মো. রাজীব ডাকুয়া বলেন, গরুটিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার দেওয়া হয়। সকালে ৮ কেজি সাইলেজ, পরে ভুসি, অ্যাংকর ডাল, ভুট্টা, চালের কুড়া খাওয়ানো হয়। তিনবেলা গোসল করানো হয়। গরুটির সঙ্গে আমার বন্ধুর মতো সম্পর্ক হয়ে গেছে ওর কাছে গেলেই আমার আদর নিতে চায় আমিও সেভাবে যত্ন করি।
