মুরগির খামার করে সফল হয়েছেন ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের বাহালুল কবীর খান। ২০১২ সালে বাণিজ্যিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান নবজেন ব্রাউন জাতের ৫০০ লেয়ার মুরগি নিয়ে হরিগঞ্জ এলাকার হাসেম মাস্টার সড়কের নিজ বাড়ির আঙিনায় শুরু করেন খামার। স্বল্প পুঁজিতে মুরগির খামার করে এখন বেশ স্বাবলম্বী তিনি। শুরুতে খামারে মুরগির সংখ্যা কম থাকলেও এখন তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার মুরগি আছে তার খামারে। যেখানে ১৮০০ মুরগি গত ৯ মাস ধরে ডিম দিচ্ছে। প্রতি মাসে অর্ধলক্ষাধিক ডিম উৎপাদন হচ্ছে খামারে। ডিমগুলো স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
খামারি বাহালুল কবীর খান বলেন, বাণিজ্যিক চিন্তা থেকেই ২০১২ সালে মুরগির খামারটি দেই। কয়েক বছরের ব্যবধানে মুরগির সংখ্যা বেড়েছে খামারে। বর্তমানে দুই হাজার মুরগি রয়েছে। ১৮০০ মুরগি গত ৯ মাস ধরে নিয়মিত ডিম দিচ্ছে। এতে করে প্রতি মাসে আমার খামার থেকে অর্ধলক্ষাধিক ডিম উৎপাদন হচ্ছে। এসব ডিম বিভিন্ন আড়তদাররা খামারে এসে নিয়ে যান। এই ডিম স্থানীয় চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, খামারের মুরগিকে নিয়মিত বয়লার খাওয়ানো হয়। বর্তমানে মুরগির পরিচর্যা করার জন্য দুইজন শ্রমিক কাজ করছেন। খামারের আলো ও শীতলতার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগেরও ব্যবস্থা রয়েছে। মুরগি অসুস্থ হলে খাওয়ানো হয় প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ। এসব খাবার, ওষুধ, শ্রমিক ও বিদ্যুৎ বিল বাদ দিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকার মতো লাভ হচ্ছে। বাজারে এখন ডিমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ডিমের দামও ভালো পাচ্ছি। আমি মনে করি, সঠিক নিয়ম ও পরিচর্যা করলে যে কেউ মুরগির খামারে আশানুরূপ সফলতা পাবেন।
মুরগির খামারের শ্রমিক শাহিন ও হৃদয় বলেন, আমরা আগে বেকার ছিলাম। বাহালুল মিয়া খামার দেওয়ার কয়েক বছর পর থেকে আমরা এই খামারে কাজ করছি। আমরা নিয়মিত খামারের মুরগিগুলোর পরিচর্যা করি। যার বিনিময়ে এখান থেকে মাস শেষে মোটামুটি ভালো পরিমাণে বেতন পাচ্ছি। যা দিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চালাতে পারছি।
অন্যদিকে, স্থানীয় অনেকে খামারি বাহালুল কবীর খানের সফলতা দেখে নিজেরাও খামার দেওয়ার কথা ভাবছেন। যাদের মধ্যে রফিক, গিয়াস উদ্দিন এবং আব্দুল মান্নান জানান, বাহালুল মিয়া মুরগির খামার থেকে ভালো আয় করছেন। তিনি এই খামারে অনেক সময় এবং শ্রম দিচ্ছেন। আমরাও চিন্তা করছি, সন্তানদের নিয়ে এরকম একটি খামার দেওয়ার।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. রইস উদ্দিন বলেন, আমাদের অফিসের কর্মকর্তারা সবসময়ই উপজেলার যেকোনো পর্যায়ের খামারিদের পাশে রয়েছেন। আমরা তাদের বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি ওষুধ এবং প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এ ছাড়া নতুন করেও যদি কেউ খামার দিতে আগ্রহী হন আমরা তাদের পাশেও থাকব।
