ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ জাটিগ্রামে ষাটোর্ধ্ব বাক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা ঝর্ণা বেগম। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও স্বামীর মৃত্যুর পরে অভাবের সংসারে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনরকম সংসার চলে তার। আধপেটা খেয়ে কিছু টাকা জমিয়ে তৈরি করেছিলেন একটি টিনের ঘর। সেখানেই বসবাস করতেন তিনি।
বাক প্রতিবন্ধী ঝর্ণা বেগমের পরিবারের কেউ থাকেন না কোনো ঝামেলায়। তবুও শক্তির মহড়া দিতে গিয়ে অসহায় ঝর্ণা বেগমের বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা চালিয়ে তার বসতঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। তার অপরাধ তার ভ্যানচালক ছেলে সামাজিকভাবে একটি গ্রাম্য দলের অন্তর্ভুক্ত।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকালে বাক প্রতিবন্ধী ঝর্না বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার টিনের ঘরটির বেড়ার চারদিকে ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন টিন খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতরের ফ্রিজ, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। ভাতের হাড়ি, থালাবাসনগুলো এলোমেলো পড়ে আছে। ভাঙা ও টিন কাটা ঘরে কীভাবে থাকবেন আর তা মেরামতই বা কিভাবে করবেন, তা ভেবেই দিশেহারা বৃদ্ধা ঝর্ণা বেগম। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি।
জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর-ব্রাহ্মণ জাটিগ্রাম গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি সদস্য সৈয়দ শরিফুল ইসলামের সঙ্গে পরাজিত ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী বোরহান মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
বেনাপোলে এক ব্যক্তিকে গলাকেটে হত্যাএই বিরোধকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টায় উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫ জন আহত ও বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
তবে বোরহান মিয়ার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল নিরীহ বাক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা ঝর্ণা বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের এই অমানবিক ঘটনার বিরুদ্ধে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও উঠেছে ক্ষোভের ঝড়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বোরহান মিয়ার বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
