ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিলুপ্তির পথে ‘ভেন্না গাছ’

৮০-র ঊর্ধ্বে বৃদ্ধা রহিমা বেগম জানান, ভেন্নার তেলের সুঘ্রাণ ছিল অন্যরকম। এই তেলের তরকারি মজা লাগতো, আমরা ভেন্নার তেল ব্যবহার করে থাকতাম। সেটা ছিল অনেক আগের কথা। 

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৬ এএম

বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার চিরচেনা অন্যতম উপকারী উদ্ভিদ ‘ভেন্না গাছ’। এক সময় এ গাছ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পুকুরে, নদীর পাড়, বাড়ির আঙিনায় দেখা যেত। আর এখন প্রায় স্মৃতি হয়ে যাচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক সময় গ্রামের মানুষেরা ভেন্নার ফল দিয়ে তেল তৈরি করে সেটা ব্যবহার করত। ভেন্না গাছ ১০ থেকে ১৫ হাত পর্যন্ত উঁচু হয়। ফল দেওয়া শুরু করে মাঘ ও ফাল্গুন মাসে। ফলের গায়ে কাটার মতো চিকন কাঁটা থাকে ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পাকলে তেতুলের বিচির রঙের মতো ধারণ করে। এ ফল রোদে শুকিয়ে গ্রামের নারীরা ঢেঁকি অথবা শিল-পাটায় পিসে তেল বের করে থাকতেন। এই তৈল সম্পূর্ণ নির্ভেজাল ও বিষমুক্ত।

ছবি: খবর সংযোগ

ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে চোঁখে পড়ে গ্রাম বাংলার চিরচেনা ভেন্না গাছ। যার সংখ্যা খুই নগণ্য। এছাড়া যে কয়েকটি গাছের দেখা পাওয়া গেছে সেগুলো অযত্নে অবহেলায় সম্পূর্ণ বেড়ে ওঠে। যদিও বাণিজ্যিকভাবে এই গাছের চাষ করা হয় না।

৮০-র ঊর্ধ্বে বৃদ্ধা রহিমা বেগম জানান, ভেন্নার তেলের সুঘ্রাণ ছিল অন্যরকম। এই তেলের তরকারি মজা লাগতো, আমরা ভেন্নার তেল ব্যবহার করে থাকতাম। সেটা ছিল অনেক আগের কথা। 

স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম জানান, এক সময় গ্রামের প্রতিটা পরিবার রান্নার কাজে ভেন্নার তেল ব্যবহার করত। এছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিল না। এই তেলে তার পরিবারের সকল রান্নার কাজ চলতো। কিন্তু আধুনিক যুগে এখন আর ভেন্নার তেলের ব্যবহার দেখা যায় না। 

তিনি জানান, গ্রাম বাংলার এক সময় রাস্তার ধারে বাড়ির পাশের বনে জঙ্গলের পাশে পতিত জমিতে ভেন্না গাছ দেখা যেত। এখন আর তেমন একটা চোঁখে পড়ে না। তবে এর বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে রান্নার তেলে পেতে কষ্ট হতো না।

ছবি: খবর সংযোগ

কালীগঞ্জ উপজেলার ছোটশিমলা গ্রামের মান্নান বিশ্বাস জানালেন, এক সময় গ্রাম অঞ্চলে প্রায় জায়গায় দেখা যেত এই চিরচেনা ভেন্না গাছ। বর্তমানে বনাঞ্চল বিলুপ্তির কারণে চিরচেনা অতি প্রয়োজনীয় ভেন্না গাছও আজ বিলুপ্তির পথে। পুনরায় এটা আগের দিনের মতো গজাতে চাইলে অবশ্যই স্থানীয় পর্যায়ে বীজ বা চারা রোপন করতে হবে।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্ট্রি চন্দ্র রায় বলেন, প্রাচীনকালে গ্রাম অঞ্চলে দেখা যেত চিরচেনা ভেন্না গাছ। তবে এখন আর তেমন একটা চোঁখে পড়ে না। তবে এই গাছের অনেক উপকারীতা আছে। তাই গ্রামের কেউ যদি উদ্যোগ নেয় চাষের জন্য তাহলে আমরা সেই চাষীকে সার্বিক সহযোগিতা করব।

RA/KK
আরও পড়ুন