সম্প্রতি আকস্মিক বন্যায় নেত্রকোনা জেলার ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। বিশেষ করে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যায় জেলার সড়ক, মৎস্য ও কৃষি বিভাগ মিলিয়ে মোট ৫৭১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে সবচেয়ে বেশি ৩১৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকার কয়েক শতাধিক কাঁচা ও আধা পাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও তথ্য পাওয়া গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান জানান, জেলার ১০টি উপজেলা মিলিয়ে এ বছর ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে বন্যায় ২৪ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমির আমন ও ১৭৭ হেক্টর জমির শাক সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১৩ কোটি টাকা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নেত্রকোনা জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম জানান, এলজিইডি'র আওতাধীন জেলায় ৫ হাজার ৯৫৩ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৬৩৮ কিলোমিটার পিচ ঢালা সড়ক। অন্যগুলো সিসি, আরসিসি, মেকাডম, কার্পেটিং ও কাঁচা সড়ক। বন্যায় জেলার ৬৫০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায় এবং ২০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর বলেন, বন্যায় জেলার ১ হাজার ৭৩০টি ফিশারি, পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ এবং পোনা ভেসে গিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, সব বিভাগকে সরেজমিনে গিয়ে বন্যায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিরোপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মৎস্য চাষিদের পুনর্বাসন করবো এবং ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হবে।
