ঢাকা
রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ছেলের সঙ্গে মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হলেন মা-খালা

আপডেট : ১৪ মে ২০২৪, ০৯:০৮ এএম

নাটোরের নলডাঙ্গায় একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন মা, ছেলে ও খালা। মা নাসিমা বেগম জিপিএ-৩.৬৪, ছেলে সোহান ৩.৯৬ ও খালা হালিমা ৩.৮৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হোন। 

রোববার (১২ মে) এসএসসি ফল প্রকাশের পর মা, ছেলে ও খালা এ ফলাফল অর্জন করেন। এমন ফলাফলে পরিবারসহ এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন দুই নারী জনপ্রতিনিধি।

জানা গেছে, ছেলে সোহান ও মা নাসিমা বেগম উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর দিয়ারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খালা হালিমা বেগম একই ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দিঘা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী। 

মা নাসিমা বেগম বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সংরক্ষিত ৪, ৫, ৬ নং ওর্য়াডের এবং খালা হালিমা বেগম একই ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নং ওর্য়াডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। 

মা নাসিমা বেগম ও খালা হালিমা বেগম কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওয়াতায় ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ওমরগাড়ি ফাজিল মাদ্রসার ভোকেশনাল শাখা থেকে এবং একই শিক্ষাবর্ষে ছেলে সোহান নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন।

শিক্ষার্থী সোহান জানান, আমার সঙ্গে মা ও খালা এসএসসি পাস করায় সত্যিই আমি অনেক খুশি। অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করছে এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

মা নাসিমা বেগম বলেন, আমার খুব ইচ্ছা ছিল এসএসসি পাস করার। কিন্ত মা-বাবার সংসারে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। পরে আমি আমার ছেলের পরামর্শে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর রাজশাহীর পুঠিয়া ওমরগাড়ি ভোকেশনাল মাদ্রসায় ভর্তি হই। এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আজ আমি পাস করেছি, তাই আমি আন্দদিত।

খালা হালিমা বেগম বলেন, আমি আমার স্বামীর পরামর্শে বোন নাসিমার সাথে ওমরগাড়ি মাদ্রসার ভোকেশনাল শাখায় ভর্তি হই। দুই বোন এক সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করে আমরা অনেক খুশি। 

তিনি বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় অনেক সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। সত্যি কথা বলতে লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই। পাস করার ফলে আমাদের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পাবে।

এবিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) নাটোর জেলা কমিটির সদস্য বুলবুল আহমেদ বলেন, যে কোনো কাজে শিক্ষা যে প্রয়োজন সেটা এই দুই নারী জনপ্রতিনিধি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সবকিছু উপেক্ষা করে তারা স্বাভাবিক বয়সের চেয়ে বেশি বয়সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন এটা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। জ্ঞান অর্জনের এই আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি মানুষের ভেতর তৈরি হোক, এবং জ্ঞানভিত্তিক একটি সমাজ তথা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠত হোক এটাই আমার প্রত্যাশা। তাদের এমন কৃতিত্বকে সবার সম্মান করা উচিত। 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে উপজেলার বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বোন নাসিমা বেগম ও হালিমা বেগম ও নাটোরের ছাতনি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এক বোনসহ তিনবোন এক সঙ্গে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে সারাদেশে আলোচিত ছিলেন।

AHA/WA