নাটোরের লালপুরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া গত দুই বছর একটি চক্র প্রতারণা করে অন্যের টিসিবি পণ্য তুলে নেওয়ার তথ্য রয়েছে।
টিসিবির কার্ড বরাদ্দের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শতশত পরিবারের একাধিক কার্ড রয়েছে। অথচ সব কার্ডের বিপরীতেই পণ্য বরাদ্দ দিয়েছে টিসিবি!
অনুসন্ধানে জানা যায়, এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রকৃত দরিদ্রের পরিবর্তে টিসিবির কার্ড পেয়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা। এছাড়া সুবিধাভোগীদের অনেকেই জানেই না তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে টিসিবি কার্ডে নাম বসিয়ে পণ্য তুলে নিয়েছে প্রতারক চক্র। শুধু তাই নয়, একই পরিবারে সর্বোচ্চ একটি কার্ড পাওয়ার নিয়ম থাকলেও একই পরিবারে একাধিক কার্ড পেয়েছে।

তেমনি একজন উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মহিলা কাউন্সিলর তহমিনা বেগম। তিনি একাধিক কার্ড নিয়েছেন। পরিবার প্রতি একটি ফ্যামিলি কার্ড প্রাপ্তির সুযোগ থাকলেও কীভাবে তিনটি কার্ড পেলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তহমিনা বেগম জানান, তিনি তালিকায় নাম দেননি। তার ছেলে নিজেই পৌরসভায় গিয়ে কার্ড করে নিয়েছেন।
উপজেলার বাহাদীপুর গ্রামে আব্দুর রহিম, রুবিনা খাতুন, আনছার আলীসহ ১৫ পরিবার জানান, নতুন করে টিসিবি কার্ড করতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, তাদের নামে কার্ড ইস্যু করা আছে। এমনকি কার্ডের বিপরীতে নিয়মিত পণ্য উঠানো হয়েছে। তাই এ ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তারা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘শুধু লালপুরেই নয়, এ জেলায় বিগত সময়েও টিসিবি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। যেটা এখনও চলমান রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে এমন অনিয়ম প্রশাসনের চরম অবহেলা বলে মনে করছি। দ্রুত নতুন তালিকার অনুরোধ জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, প্রকৃত পক্ষে ভুক্তভোগীদের নাম তালিকায় আছে কিনা খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব। এছাড়া অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
