ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

রংপুরের অন্নদানগরে রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব উদযাপন 

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১১:০০ এএম

রংপুরে ‘রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব-২০২৫’ উদযাপিত হয়েছে। পাঠাগার ভিত্তিক সমাজ-সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্র’ এ আয়োজন করে। 

সোমবার (২৩ জুন) পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পীরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা। উৎসবে আয়োজিত সেমিনারে ‘একবিংশ শতকে রবীন্দ্র-নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা’ বিষয়ক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনা করেন গবেষক ও পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব এমাজউদ্দীন আহমেদ। 

অনুষ্ঠানের মূল আলোচক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আলোকিত পাঠকের কাছে লেখকের ধর্ম পরিচয় মূখ্য নয়। বিষয়টি রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের কাছেও সত্য। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে হিন্দু-মুসলিম মনে করার চেয়ে মানবতাবাদী ভাবা উত্তম। তারা ছিলেন নিখাদ অসাম্প্রদায়িক মানুষ। হিন্দু মুসলিমের মেলবন্ধনে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী ও অহিংস সমাজ প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্র-নজরুল অধ্যয়ন ও চর্চা আবশ্যক।

এছাড়াও অন্যান্য আলোচকদের আলোচনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিশীল জীবন দর্শনের বহুমুখী দিক আলোচিত হয়। আলোচকগণ শিক্ষার্থীদের রবীন্দ্র-নজরুল অধ্যয়নে তাগিদ দেন। 

কবি ও শিক্ষক কৃষ্ণ কমল বর্মনের সঞ্চালনায় ও প্রবীণ শিক্ষক মো. ইমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মীর রবি বলেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে বৃহৎ পরিসরে সমৃদ্ধ করেছেন যে দুজন বাঙালি মনীষা, তার সবটা জুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় জীবনে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। মানব সভ্যতার উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের পরম্পরা বহন করছে সংস্কারবাদী বাঙালি সমাজ। বাঙালি মুসলিম ও হিন্দু সমাজের পশ্চাদমুখীতার দরুন সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাস্প একবিংশ শতকে এসেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে, তা থেকে উত্তরণের অন্যতম উপায় হতে পারে রবীন্দ্র-নজরুল অধ্যয়ন। আমরা চাই নতুন প্রজন্মের মাঝে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের রচনাসমূহ বহুলপঠিত হোক এবং একই সঙ্গে আজকের তরুণেরা তাদের মানবতাবাদী দর্শন চর্চায় মনোনিবেশ করুক। এই লক্ষ্যে আমরা রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্কিত প্রচলিত প্রোপাগান্ডা, ভুল ও বিভ্রান্তিগুলোকে খন্ডন করে পরিশালীত মননকাঠামো তৈরির সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। এই চাওয়া থেকেই আমাদের ‘রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব’র উদ্যোগ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, অন্নদানগর দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনূর ইসলাম।

উৎসবে আলোচনা সভা, সেমিনার ও প্রতিযোগিতা ছাড়াও সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল রবীন্দ্র-নজরুল সংগীতানুষ্ঠান। এতে সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, প্রজন্ম সমাজ-সংস্কৃতি কেন্দ্র, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীবৃন্দ। 

এছাড়াও উৎসবে কুইজ, আবৃত্তি ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় স্থানীয় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বই ও শিক্ষা সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। বিজয়ীরা হলেন, আবৃত্তিতে সীমান্ত কুমার শীল, আশরাফিয়া জান্নাত, রুদ্র শর্মা, উপস্থিত বক্তৃতায় কাওছার হাবীব, সুলতান মাহমুদ, সীমান্ত কুমার শীল ও  কুইজে নুশরাত জাহান নূপুর, হালিমা আক্তার হ্যাপি ও মাইশা তাসনিম হিনা। আয়োজনে সহযোগী পার্টনার ছিল ক্ষীরোদা রানী শিক্ষা ট্রাস্ট, নবভাবনা ও কম্বিনেশন বিল্ডার্স লিমিটেড।

SN
আরও পড়ুন