রংপুরের মিঠাপুকুরে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে এক যুবককে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম সিদ্দিকী।
জানা গেছে, বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধারের পর ওই যুবক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। গতকাল দুপুরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের স্বজন ও পরিবারের লোকজন জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবকের নাম সোহেল মিয়া (২৭)। তিনি মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পূর্ব বড়বালা (ভোলার পাতার) গ্রামের আজাদুল হক (ক্যাতার) ছোট ছেলে। গত ২৭ অক্টোবর বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্য মনারুল ইসলাম বাড়ি থেকে সোহেলকে ডেকে স্থানীয় বালুয়া বাজারে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছালে সোহেলকে কয়েকজন যুবক মারপিট করে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে পার্শ্ববর্তী মিলনপুর গ্রামের আশরাফুল মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে যান।
আশরাফুল মেম্বার তার ভাতিজি জামাতার মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোহেলকে নিজ বাড়িতে ২ দিন আটক রেখে বেদম মারপিট করেন। একপর্যায়ে সোহেলের অবস্থা গুরুতর হলে বুধবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় হাবিবুরের মাধ্যমে সোহেলের বাবা-মাকে ডেকে সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক মুচলেকা নিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোহেলকে হস্তান্তর করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সোহেলের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সোহেলের বাবা ক্যাতা মিয়া বলেন, আশরাফুল মেম্বার আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায়। একদিকে আমার ছেলেকে অমানবিক নির্যাতন চালায়, অন্যদিকে গ্রাম পুলিশ এবং হাবিবুর রহমান নামে এক যুবক সোহেলকে রক্ষায় চাঁদা দাবি করেন। আমার ছেলে অন্যায় করলে দেশে আইন আছে। প্রয়োজনে তারা পুলিশকে দিতে পারতেন। সোহেলের ১ বছর এবং ৩ বছর বয়সি নাবালক দুটি শিশু রয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই।
অভিযুক্ত আশরাফুল মেম্বার বলেন, আমার জামাইয়ের মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সোহেলকে আমি ধরে আনতে বলেছি, এটা সত্য। কিন্তু সে কীভাবে মারা গেলো বুঝতে পারছি না। এমন হালকা শাসনে সে মরার কথা নয়। তাছাড়া তার পরিবারের জিম্মানামা আমাদের কাছে আছে।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রেমের জেরে ২ কিশোরের দ্বন্দ্ব, একজনকে পিটিয়ে হত্যা