সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজি সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করছেন। এতে দূরপাল্লার বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রী ও জরুরি কাজে যাতায়াতকারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ছয়টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছে সুনামগঞ্জ পরিবহণ মালিক সংগঠন ও পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন।
যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, জামালগঞ্জ থেকে সিলেট যাওয়ার জন্য সকালে বাসস্ট্যান্ডে এসেছি। এসে দেখি পরিবহনে কর্মবিরতি। আমার পরিবার সিলেট থেকে আসার কথা ছিল। ওরাও আসতে পারছে না, আমিও যেতে পারছি না। আমিসহ অনেক যাত্রী যেতে পারছেন না। আজকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার না করলে আমাদের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।
এমসি কলেজের শিক্ষার্থী তানজিনা বেগম বলেন, আমি এমসি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। আমার বাড়ি জামালগঞ্জ। কলেজে ট্রাম পেপার জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আজ। বাস স্টেশন এসে দেখি গাড়ি চলাচল বন্ধ। সিএনজিও চলছে না। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছি। চিন্তা করছি আমি এখন কি করব।
শিক্ষার্থী আব্দুল মুমিন বললেন, আজ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামিস্টি বিভাগে এ ইউনিটে ভর্তির শেষ দিন। সুনামগঞ্জ থেকে যাবার গাড়ি পাচ্ছি না। না যেতে পারলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আমার।
সুনামগঞ্জ পরিবহণ মালিক সংগঠন এবং পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের লামাকাজি সেতুতে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে। গত পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতা এই সেতুটিতে টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু দুই মাস পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর একটি কুচক্রী মহল এবং সিলেটের সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ লামাকাজি সেতুতে টোল আদায়ের টেন্ডার আহ্বান করে। এই টেন্ডার বাতিলের দাবিতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক পরিবহণ মালিক এবং শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সুনামগঞ্জের সিএনজি, অটোরিকশা, হিউম্যান হোলার্স, সুজুকি, লেগুনা, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা যৌথভাবে আজ যান চলাচল বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে জানিয়েছেন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি জুয়েল মিয়া জানালেন, লামাকাজি সেতুতে টোল আদায় বন্ধ না হলে কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালব্যাপী চলবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও বিদেশি যাত্রীবাহী যান চলাচলে কিছুটা শিথিলতা রাখা হয়েছে।
