ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিচার বিভাগের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নের রায় মঙ্গলবার

আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ এএম

অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে হাইকোর্টের রায় ঘোষণা হবে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর)।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ রায় দেবেন।

বর্তমানে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে, যা তিনি সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োগ করেন। তবে ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী একটি রিট করে এই অনুচ্ছেদ এবং ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। একইসঙ্গে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশনা চান।

হাইকোর্ট ওই বছরের ২৭ অক্টোবর রুল জারি করে জানতে চায়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন সাংবিধানিকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করা হবে না। ২০১৭ সালের শৃঙ্খলাবিধিমালা কেন বাতিলযোগ্য নয়। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় কেন গঠন করা হবে না

রিটে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ছিল। তবে ১৯৭৪ সালের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির ওপর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ‘সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে’ বাক্যটি যুক্ত করা হলেও সেই সংশোধনীকে আপিল বিভাগ অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। ২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বর্তমান ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল হয়।

এরপর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জানুয়ারি রুলের শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। গত ২৯ জানুয়ারি এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়াকে নিয়োগ দেন আদালত। ওই বেঞ্চে রুল শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। এর মধ্যে গত ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন। বিচারপতি আহমেদ সোহেলের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে গত ২৩ এপ্রিল রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়, যা শেষ হয় ১৩ আগস্ট।

এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অধস্তন বিচার বিভাগে নিয়োজিত ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণ, পদায়ন, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকবে এবং তিনি সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা প্রয়োগ করবেন।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হতে পারে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পৃথকীকরণ প্রশ্নে রাষ্ট্রের অবস্থান। আইন মন্ত্রণালয় বনাম সুপ্রিম কোর্ট কে নিয়ন্ত্রণে থাকবে অধস্তন আদালত। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যৎ।

DR/AHA
আরও পড়ুন