ঢাকা
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিচারের আদেশ পুনর্বিবেচনা চান ইনু

আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫২ পিএম

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে রিভিউ করেছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে করা এ আবেদনে জুলাই বিপ্লবকে ‘সো-কল্ড’ (তথাকথিত) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এমন মন্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলছেন প্রসিকিউশন। 

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ বিষয়ে শুনানি হয়। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্য হলেন জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

আবেদনটি কার্যতালিকায় এলেও ট্রাইব্যুনালে আসেননি ইনুর আইনজীবীদের কেউ। পরে এ নিয়ে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে রিভিউ আবেদনের বেশ কয়েকটি দিক তুলে ধরেন তিনি।

ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু এ আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। যেখানে বর্তমান সরকারের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন তারা। অথচ এ সরকার গঠিত হয়েছে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে। এ ছাড়া জুলাই বিপ্লবকে সো-কল্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন ইনু। সরকার নাকি সবাইকে ইনডেমনিটি বা দায়মুক্তি দিচ্ছে এমন কথাও উল্লেখ করা হয়। অথচ কাউকেই দায়মুক্তি দেয়নি সরকার। তাদের এমন কথা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তবে এ নিয়ে কোনো আদেশ দেননি ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ইনুর বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। বাকি সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ওই দিন ইনুর বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনাল। একপর্যায়ে আসামিকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি দোষী নাকি নির্দোষ? তখন নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ দাবি করেন হাসানুল হক ইনু। ২৮ অক্টোবর আটটি অভিযোগের কিছু পড়ে শোনান তার আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। একপর্যায়ে কোনো অভিযোগই সত্য নয় জানিয়ে তার অব্যাহতির আবেদন করেন তিনি। একইসঙ্গে ট্রাইব্যুনালকে এসব অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখার অনুরোধ জানান। 

গত বছরের ২৬ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা থেকে হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই জাসদ নেতা। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে কুষ্টিয়ায় নিজ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে যান তিনি।

উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে কুষ্টিয়ায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ছয়জন। একইসঙ্গে আহত হন বেশ কয়েকজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এরই ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।

SN
আরও পড়ুন