কেন্দ্রীয় চরিত্রে যেসব তারকারা অভিনয় করেন, তারা সিনেমার মোট বাজেটের বড় একটা অংশ নিয়ে থাকেন, এটা আর এখন কোনো গোপন বিষয় নয়। তবে শুধু অভিনয়ের পারিশ্রমিক দিয়েই সম্পদের পাহাড় গড়া যায় না। আর তাই তারকারা বাড়তি আয়ের জন্য নির্ভর করেন বিনিয়োগ, ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা ও বিজ্ঞাপনী চুক্তির উপর। এস্কায়ার অস্ট্রেলিয়া চলতি বছর বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী অভিনেতার তালিকা করেছে। চলুন জেনে নিই, এ তালিকায় কারা জায়গা করে নিলেন। এখানে টাকার অঙ্ক অস্ট্রেলিয়ান ডলারে দেখানো হয়েছে। মূলত নেট মূল্যের ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে এই তালিকা। বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পদের হিসাব।
জ্যাকি চ্যান
নেট সম্পদ: ৫৫৭.০৯ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও জ্যাকি চ্যান পৃথিবীর অন্যতম ধনী মানুষ। হংকংয়ের অ্যাকশন-কমেডি দিয়ে শুরু করলেও পরে ‘রাশ আওয়ার’, ‘কুং ফু পান্ডা’, ‘করাটে কিড’-এর মতো হলিউড ফ্র্যাঞ্চাইজিতেও তিনি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বহু দেশে পণ্যের বিজ্ঞাপন করেন, নিজস্ব সিনেমা হলের চেইনও রয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন, জীবনের শেষ প্রান্তে সব সম্পদ দান করে দিতে চান।
টম হ্যাঙ্কস
নেট সম্পদ: ৫৭১.৯৪ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
‘ফরেস্ট গাম্প’ ও ‘ফিলাডেলফিয়া’তে অভিনয়ের জন্য টানা দুইবার অস্কার জেতা হ্যাঙ্কস সমালোচকদের যেমন প্রিয়, তেমনি বক্স অফিসেও সফল। তবে তার বিপুল সম্পদের বড় অংশই এসেছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে—যার মূল্য আনুমানিক ২২৫ মিলিয়ন ডলার।
জ্যাক নিকোলসন
নেট সম্পদ: ৫৯০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
৬০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করা জ্যাক নিকোলসনের অর্থের বড় উৎস হলো বিনিয়োগ। রিয়েল এস্টেট ও দামি শিল্পকর্মে তার বিনিয়োগের পরিমাণ আনুমানিক ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া টিম বার্টনের ব্যাটম্যান থেকে লভ্যাংশ বাবদ প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন (মুদ্রাস্ফীতির হিসাব অনুযায়ী)।
ব্র্যাড পিট
নেট সম্পদ: ৫৯৪.২৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
সম্প্রতি একটি ‘এফ-ওয়ান’ চলচ্চিত্রের জন্য ৪৫ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম নিয়েছেন। তবে পিটের আয় শুধু এখানেই থেমে নেই। সাবেক স্ত্রী জেনিফার অ্যানিস্টনের সঙ্গে মিলে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন প্ল্যান বি এন্টারটেইনমেন্ট, যেটি ‘দ্য ডিপার্টেড’, ‘মুনলাইট’ ও ‘টুয়েলভ ইয়ারস আ স্লেভ’-এর মতো অস্কারজয়ী ছবি প্রযোজনা করেছে।
রবার্ট ডি নিরো
নেট সম্পদ: আনুমানিক ৬০০+ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
‘গডফাদার’, ‘হিট’, ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো অভিনয়ের বাইরেও গড়েছেন আয়ের পথ। জনপ্রিয় সুসি চেইন নোবুর সহপ্রতিষ্ঠাতা তিনি, যার শাখা আছে বিশ্বজুড়ে। এ ছাড়া নিউইয়র্কে তার নামেই রয়েছে একাধিক রেস্টুরেন্ট ও রিয়েল এস্টেট।
জর্জ ক্লুনি
নেট সম্পদ: ৭৪২.৮ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসায়িক বুদ্ধির কারণে ক্লুনির সম্পদ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। জনপ্রিয় পানীয় ব্র্যান্ডের সহমালিক ছিলেন, যা তিনি প্রায় এক বিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন। বর্তমানে তিনি প্রযোজক হিসেবেও বেশ সক্রিয়।
শাহরুখ খান
নেট সম্পদ: ৮৭৬.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
ভারতের ‘কিং খান’ তিন দশকের বেশি সময় ধরে বলিউডে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন। শুধু অভিনয় নয়, মুম্বাইসহ বিভিন্ন জায়গায় তার রিয়েল এস্টেট রয়েছে। এ ছাড়া তার প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ প্রতিবছরই সিনেমা, ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করে। অভিনয় ছাড়াও বহু পণ্যের শুভেচ্ছাদূত তিনি।
টম ক্রুজ
নেট সম্পদ: ৮৯১ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
‘মিশন ইম্পসিবল’ ও ‘টপ গান’ ফ্র্যাঞ্চাইজি টম ক্রুজকে দিয়েছে বাণিজ্যিক সফলতা। তার উপার্জনের বড় অংশই এসেছে সিনেমা থেকেই—এক গবেষণায় দেখা গেছে, তিনি প্রতি শব্দে আয় করেছেন প্রায় সাত হাজার ডলার! যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপকূলেই তার সম্পদ রয়েছে। তিনি অন্যতম প্রযোজকও বটে।
ডোয়েইন জনসন
নেট সম্পদ: ১.১৯ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন রেসলিং দিয়ে, এখন হলিউডের অন্যতম ধনী তারকা। একটি জনপ্রিয় পানীয় কোম্পানিতে ডোয়েইন জনসনের ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, যার মূল্য প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। এমনকি অভিনয়ের বাইরেও তিনি ব্যবসার এক পরিচিত মুখ।
আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার
নেট সম্পদ: ১.৪৯ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার
তালিকার শীর্ষে রয়েছেন অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার। ‘টার্মিনেটর’ দিয়ে খ্যাতি পাওয়া অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত এই তারকা শুরু থেকেই বিনিয়োগ করেছেন রিয়েল এস্টেটে। বর্তমানে তার রয়েছে এক বিশাল সম্পত্তি সাম্রাজ্য এবং বিশ্বের অন্যতম বড় বিনিয়োগ কোম্পানিতে তার ৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।