ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

লালনের তিরোধান দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা

আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

লালনের তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, একটা দেশকে ফিজিক্যাল কলোনি বানানোর আগে প্রথম যে কাজটা করতে হয় সেটা হচ্ছে তাকে ইন্টেলেকচুয়াল কলোনিতে রূপান্তরিত করা। তাকে প্রতিনিয়ত বোঝানো যে- তোমার কোনো সংস্কৃতি নাই। থাকলেও তোমার সংস্কৃতি লো কালচার। যেমন ধরেন, লালনের গান। হেজেমনিক কালচারের ফ্রেমের সাথে মিলছে না বলে এটাকে হাই আর্ট মানতে পারলো না আমাদের উপনিবেশিক মন। ভদ্রসমাজ তখন চিন্তা করলো এটাকে নিয়ে কি করা যায়? সহজ সমাধান হিসাবে ট‍্যাগ দিয়ে দিলো “ফোক”। মানে মেইনস্ট্রিম না, সাব কালচার। তারপর ধরেন রক মিউজিক। এটা নিয়েও ভদ্রসমাজ বিপদে পড়ে গেল। একেতো তাদের সেট করা “হেজেমনিক ফ্রেমে”। হাই আর্ট হিসাবে ধরা যাচ্ছে না। সহজ সমাধান করল ট‍্যাগ দিয়ে ‘অপসংস্কৃতি’।

তিনি আরও বলেন, এইভাবে আমাদের রাষ্ট্র বা এস্টাবলিশমেন্ট চিরকাল আমাদের গৌরবময় ঐশ্বর্যগুলোকে রাষ্ট্রীয় উদযাপন ও স্বীকৃতির বাইরে রেখেছে। চব্বিশ পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের দায় হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের চর্চা এবং অংশগ্রহণে যে সংস্কৃতি আন্তর্জাতিকমানের হয়ে উঠেছে সেটাকে সেলিব্রেট করা। এই সেলিব্রেশন জাতিকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ করে তোলে। পাশাপাশি এই সেলিব্রেশন বাইরের দুনিয়ায় আমাদের নিজেদের কালচারাল আইডেন্টিটি তৈরিতে সাহায্য করে।

জাতীয় দিবস ঘোষণা প্রসঙ্গে ফারুকী বলেন, এর প্রথম ধাপ হিসাবে আজকে ক‍্যাবিনেটে লালনের তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে আরো কয়েকজন কালচারাল আইকন এবং কনটেমপোরারি মাস্টারকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এস এম সুলতানের জন্মদিনকে ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসাবে উদযাপন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি আলোচনা করেছি, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের বড় কালচারাল ফেনোমেনাগুলো নিয়ে। যেমন হুমায়ুন আহমেদ। আমার মনে হয় না তার চেয়ে বেশি ইমপ‍্যাক্ট আমাদের লেখকদের মধ‍্যে কেউ রাখতে পেরেছেন। আলোচনা করেছি বাংলাদেশী রক আইকন সেলিব্রেট করার বিষয়ে।

সবশেষে ফারুকী বলেন, লালন সেলিব্রেট করা দিয়ে আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের বাইরে তাকাতে শুরু করলাম। এটা কেবল শুরু। আমি নিশ্চিত সেদিন বেশি দূরে না যখন কনটেমপোরারি মাস্টার আর্টিস্টদেরও আমরা সেলিব্রেট করব রাষ্ট্রীয়ভাবে। ধরা যাক, আইয়ুব বাচ্চুর কথাই। বাংলাদেশের এমন কোনো বর্গকিলোমিটার এলাকা পাওয়া যাবে না যেখানে তার গান বাজে নাই। তার মানের মিউজিয়াশিয়ান যে কোনো দেশের জন‍্যই গর্বের। তার জন্মদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করতে মৃত‍্যুর কতশো বছর পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? দ‍্য আনসার, মাই ফ্রেন্ড, ইজ ব্লোয়িং ইন দ‍্য উইন্ড।

HN
আরও পড়ুন