ঢাকাই সিনেমার ক্ষণজন্মা জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহের রহস্যজনক মৃত্যুর ২৯ বছর পর আদালতের নির্দেশে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সালমান শাহের স্ত্রী সামিরাসহ ১১ জনকে আসামি করে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে, অভিনেতা সালমান শাহ হত্যা মামলা পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তার মা নীলা চৌধুরীর রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে এই হত্যা মামলা চলবে বলে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, সালমান শাহর মৃত্যুর পর তার বুকের বাম পাশে কালো দাগ ছিল এবং মল ও বীর্যও বের হয়েছিল। তার ঘরে সিরিঞ্জ এবং স্ত্রীর ব্যাগে ক্লোরোফরম ওষুধ পাওয়া যায়। মৃত্যুর সময় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা হয়নি। পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ থাকলেও, সিবিআইয়ের তদন্তে গড়মিল ছিল বলে অভিযোগ করা হয়।
সালমান শাহর প্রকৃত নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। ক্যারিয়ারের শুরুতে ছোটপর্দায় ‘আকাশ ছোঁয়া’, ‘দোয়েল’, ‘সব পাখি ঘরে ফেরে’, ‘সৈকতে সারস’, ‘নয়ন’ ও ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ সহ একাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন।
নব্বইয়ের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের এক ধূমকেতুর নাম সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এই অভিনেতা মাত্র সাড়ে তিন বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করে নিমিষেই খসে পড়েন চলচ্চিত্রের আকাশ থেকে। ১৯৯৩ সালে সালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। প্রয়াত নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত সিনেমাটি দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মতো আবিষ্কার করল এক নবাগত নায়কের অসাধারণ অভিনয়শৈলী। এমনি করে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা প্রেক্ষাগৃহ মুখী হলেন, পরিচালকরা হলেন আস্বস্ত। এমনি করে সুদিন ফিরে আসে বাংলার চলচ্চিত্রে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি অচেনা অজানা সালমানকে। বাংলা চলচ্চিত্রের ত্রাতা হয়ে একে একে উপহার দিলেন দুর্দান্ত ২৭টি সিনেমা। অভিনয়ের জাদু দেখালেন, সবার মন জয় করলেন আবার কাউকে কিছু না-বলে একবুক চাপা অভিমান নিয়ে চলেও গেলেন।
সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘দেন মোহর’ ও ‘তোমাকে চাই’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ এবং ‘বিচার হবে’। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ও ‘এই ঘর এই সংসার’ প্রভৃতি।
‘মিথ্যা সম্পর্কের চেয়ে নিঃসঙ্গতা বেশি নিরাপদ’ 