ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ছাত্র-জনতার বিজয়ে কী বললেন তারকারা

আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫২ পিএম

ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই সাধারণ মানুষদের সঙ্গে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে দেশের তারকা অঙ্গন। বিভিন্ন অভিনয়শিল্পী, চিত্রতারকা, সংগীতশিল্পীরা সামাজিক মাধ্যমে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বৈষম্যবিরোধী এই আন্দোলনের সঙ্গে আগেই সংহতি জানিয়েছিলেন শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকাই। তারাই নতুন করে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন বিভিন্ন মাধ্যমে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কে, কী বললেন-

সঙ্গীত শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এখন স্বপ্ন একটাই—দেশটাতে গণতন্ত্র দেখে যেতে চাই, আমাদের তো বয়স হয়েছে; জীবনের শেষ অধ্যায়ে আছি। এখন এই একটাই চাওয়া। এবার  তরুণ সমাজের উত্থান দেখে চমকে গেছি। তাদের দেশপ্রেম বলি, স্পৃহা বলি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার যে মানসিকতা, সেটা দেখে নিজের ভেতরে আবার আশার সঞ্চার হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, এ দেশ ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে।’ 

শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে ছাত্র জনতার গণজাগরণের সঙ্গে একাত্ম ছিলেন ফারুকী। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি সবাইকে স্যালুট জানিয়ে লিখেছেন,  ‘বিজয়ের আনন্দ অবশ্যই করবো! কিন্তু এখন সময় সংযমেরও, চোখ কান খোলা রাখারও। আমরা ২০ বছর প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখেছি। প্রতিহিংসার উত্তর দিবো আমরা কাইন্ডনেস এবং এমপ্যাথি দিয়ে।’

গীতিকার প্রিন্স মাহমুদ বলেন,  ’এই বিজয় আমাদের শিক্ষা দিল, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা, ঘৃণার রাজনীতি আর নয়। সংযম প্রয়োজন, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। সহিংসতা, হানাহানি, ধ্বংসাত্মক কাজ করা যাবে না। তাজা প্রাণের বলিদানকে মনে রাখতে হবে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার পরিণাম থেকে শিক্ষা নিতে হবে। দলীয়করণ, চাটুকারিতাকে মনে রাখতে হবে। আমরা যেন এসব না ভুলে যাই। এই প্রজন্ম লড়াই করেছে ন্যায্য অধিকার ও মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য। 

সংগীতশিল্পী  মাকসুদুল হক বলেন, ’এটা নজিরবিহীন ঘটনা। ছাত্ররাই এটা করে দেখিয়েছে। জেনারেশন জি কখনো বাজে কথা সহ্য করতে পারে না। আগামীর বাংলাদেশকে সংঘাতমুক্ত দেখতে চাই। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ চাই। বাকস্বাধীনতা, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’

হানিফ সংকেত বলেছেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মকে অভিনন্দন জানাই। ’৫২, ’৬৯ ও ’৯০–এর মতো ’২৪ সালেও গণ–আন্দোলনেও নেতৃত্বে ছিল ছাত্ররা। কখনোই ছাত্রদের আন্দোলন পরাজিত হয়নি। এবারও ছাত্ররা সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছে।’

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম বলেন, ’আগামীর বাংলাদেশের নির্মাণটা অনেক নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হবে, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করতে হবে। যাঁরাই এ দেশের নেতৃত্ব দেবেন, তাঁদের দিকে একটি সুন্দর দেশ গড়ার অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে বাংলার কোটি কোটি মানুষ।’ 

‘এখন আমি সামনে একটা পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে বাকস্বাধীনতা থাকবে। ভালোকে ভাল, মন্দকে মন্দ, ন্যায়কে ন্যায়, অন্যায়কে অন্যায় বলবে। যাঁরা আসবেন, তাঁরা যেন অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এসব কাজ করতে পারেন। এখন বিভিন্ন জায়গায় কিছু নৈরাজ্য হচ্ছে, সেটাও আশা করছি না।’ এমনটাই বলেছেন অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা।

অভিনেত্রী নাজিফা তুষি বলেন, ’একতা থাকলে যে সব সম্ভব, তা এবার ছাত্ররা দেখিয়ে দিলেন। তাঁদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। এই আন্দোলনে শত শত ছাত্র, শ্রমিক, জনতা জীবন দিয়ে গেলেন, তাঁদের স্মরণ করছি। এখন আমরা ঘরে ফিরব, এখন শান্তির দেশ প্রত্যাশা করছি। একটা বৈষম্যহীন দেশ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকলাম।’

অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান তার একাধিক পোস্টে লিখেন,  ‘স্বাধীনতার সুখ চারপাশে। আহ্ কী যে শান্তি। কী যে মধুর ‘ একইসঙ্গে তিনি লিখেন, ‘প্লিজ, আপনারা এ রকম লুটপাট আর ধ্বংসযজ্ঞ চালাবেন না। আমরা এ রকম বিজয় চাইনি, এ রকম বিজয়ের জন্য এত দিন কেউ প্রাণ দেয়নি। আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা আমাদেরই দায়িত্ব।’

ভারতীয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি প্রথম থেকেই এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আসছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, ‘যে প্রজন্মকে শাপ-শাপান্ত করেছে সকলে, তাদেরকে স্বার্থপর বলা হয়েছে। তারাই সবচেয়ে বেশি স্বার্থত্যাগ করে দেখাচ্ছে। নজরুল ফিরে আসছেন র‌্যাপ মিউজিক হয়ে, ফিরে আসছে কাব্য, স্লোগান। ১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ সালে বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। ২০২৪ সালেও দাবিয়ে রাখা যাবে না। গতকালও তিনি লিখেছেন, ‘আমি পাশে আছি, যেভাবে তোমরা বলবে।’

AHA/FI
আরও পড়ুন