ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কিডনি ইনস্টিটিউটে সরকারি খরচে মিলছে না ডায়ালাইসিসের সিরিয়াল

আপডেট : ০৭ মে ২০২৪, ১০:৩৬ পিএম

দেশের কিডনি রোগাক্রান্ত মধ্যবিত্ত ও অস্বচ্ছল রোগীদের চিকিৎসার জন্য অন্যতম গন্তব্য রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (নিকডু)। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অস্বচ্ছল ও মেহনতী মানুষরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসেন সরকারি সহায়তায় অল্প টাকায় কিডনি ডায়ালাইসিস করতে। কিন্তু সেবা গ্রহণকারী রোগীদেরকে স্বল্প খরচে ডায়ালাইসিস করার জন্য সরকারের সাথে চুক্তি করা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান "স্যান্ডরের" নির্ধারিত কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কম টাকায় ডায়ালাইসিস করতে আসা রোগীরা। আগের সিরিয়াল নেওয়া ডায়ালাইসিসগুলোর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেকটা বাধ্য হয়েই বেসরকারি মূল্যে ৩ হাজার ১৮০ টাকায় সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। অন্যদিকে নতুন সিরিয়াল না নেওয়ায় অনেক রোগী দিনের পর দিন ঘুরছেন ডায়ালাইসিস করার সিরিয়াল দিতে।অনেকে বাধ্য হয়ে সেবা ছাড়াই বাড়িতে ফিরছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখনো প্রায় আটশত রোগী ডায়ালাইসিস সেবার আবেদন জমা পড়েছে। জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাথে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডরের চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর ১৯ হাজার ডায়ালাইসিসে সরকার ভর্তুকি দেয়।ইতিমধ্যে ১৯ হাজার রোগীর কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা প্রত্যাশী কিডনি রোগীরা। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ডায়ালাইসিসে ৩০০০ টাকার মধ্যে রোগীদের থেকে ৫৬০ টাকা নেওয়া হয়। বাকি টাকা সরকার ভর্তুকি প্রদান করে। বছরে ৫০ হাজার ডায়ালাইসিস সেশন দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে স্যান্ডরের। তবে ভর্তুকি দিয়ে নয়, সব সরকারি হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়াতে চায় স্বাস্থ্য বিভাগ।

অন্যদিকে সরকারি খরচে সেবা নিতে শত শত আবেদন জমা পড়েছে হাসপাতালে। ডায়ালাইসিস সেবা পাওয়ার আসায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন রোগীরা। সক্ষমতা না থাকায় নেওয়া হচ্ছে না নতুন কোনো ডায়ালাইসিসের সিরিয়াল। হাসপাতাল জুড়ে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট পুরুষদের জন্য ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড এবং মহিলাদের জন্য ওয়ার্ড ৩ ও ৪নম্বর ওয়ার্ড বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নতুন করে ভর্তুকি দিয়ে কিডনি ইনস্টিটিউটের ডায়ালাইসিস সেবা বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শরীয়তপুর সদর থেকে মর্জিনা বেগম (৫৮) তার স্বামী গফুরকে নিয়ে ডায়ালাইসিস নিতে মাসে চার বার ঢাকায় আসেন। তাঁর দুটি কিডনিই নষ্ট। চিকিৎসার খরচ চালানোর জন্য নিজের সম্পত্তি বন্ধক রেখেছেন। তবে ৬ মাস আগে আবেদন করেও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিতে (নিকডু)তে ডায়ালাইসিসের সুযোগ পাননি। টাকা না থাকায় বাধ্য হয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আমিন তার বাবাকে নিয়ে ডায়ালাইসিস করতে আসেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে।তিনি জানান, ২ মাস আগে এখানে সিরিয়াল দিয়েছেন। আজকে এসে জানতে পারেন ডায়ালাইসিসের ফাইল নেওয়া হবে না। এর আগে থেকে অনেকগুলো ফাইল জমা পড়ে আছে, তারা চিকিৎসার সুযোগ পায়নি। নিরুপায় হয়ে তার বাবাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে চলে যাবেন বলে জানান।

জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বাবরুল আলম বলেন, আমাদের এখানে অপেক্ষমাণ তালিকা অনেক দীর্ঘ। এতগুলো রোগীর সেবা দেওয়া এই মুহুর্তে আমাদের জন্য সম্ভব না। রোগী যারা অপেক্ষায় আছেন তাদেরকে আমরা ঢাকার অন্যান্য হাসপাতাল গুলোতে চলে যেতে বলছি। তবে প্রাইভেট খরচে ডায়ালাইসিস সুবিধা চলমান রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন