ঢাকা
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ‘ভালো মশা’

আপডেট : ০৮ মে ২০২৫, ১১:৪২ এএম

ডেঙ্গু প্রতিরোধে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে- উলবাকিয়া মশা ডেঙ্গুসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগের বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

বুধবার (৭ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক গবেষকদের সমন্বয়ে একটি দল উলবাকিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি মশার সফল উৎপাদন করেছে। এই মশাগুলো ঢাকা শহরের স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

বিজ্ঞপ্তিতে উলবাকিয়া মশাকে ‘ভালো মশা’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, এটি ডেঙ্গু এবং অন্যান্য মশাবাহিত রোগের বিস্তার প্রতিরোধে একটি নিরাপদ, জৈবিক পদ্ধতি হিসেবে কাজ করবে।

এ গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গহোফার মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিডিডিআরবি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) বিজ্ঞানীরা যুক্ত ছিলেন। 

গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল নেচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টস-এ প্রকাশিত হয়েছে।

উলবাকিয়া সংক্রমিত মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম, পাশাপাশি এটি মানুষের স্বাস্থ্য বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।

আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, মশা ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ থাকতেই পারে, তবে এগুলো কোনোভাবেই জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত নয়। বরং এগুলো হলো ভালো মশা। যাদের দেহে থাকে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া।

গবেষকরা জানান, এডিস মশায় উলবাকিয়া প্রবেশ করিয়ে দুটি কৌশলে মশাবাহিত ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

প্রথমটি হলো দমন কৌশল, যেখানে শুধু পুরুষ উলবাকিয়া মশা বা ভালো মশা পরিবেশে ছাড়া হয়। এই পুরুষরা স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়, স্ত্রী মশার ডিম ফোটে না; ফলে মশার সংখ্যা কমে যায়।

বিভিন্ন দেশে এই কৌশলগুলো ইতোমধ্যে সফলভাবে প্রয়োগ হয়েছে এবং বাংলাদেশের জন্য এটি ডেঙ্গু প্রতিরোধে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে।

দ্বিতীয়টি হলো প্রতিস্থাপন কৌশল, যেখানে পুরুষ ও স্ত্রী উভয় ‘ভালো মশা’ ছাড়া হয় এবং উলবাকিয়াআক্রান্ত স্ত্রী মশারা প্রজন্মের পর প্রজন্মে এই ব্যাকটেরিয়া বয়ে বেড়ায় ও ছড়িয়ে দেয়। তারা উলবাকিয়া আক্রান্ত বা আক্রান্ত নয় এমন পুরুষদের সঙ্গে মিলিত হলেও তাদের বংশধর উলবাকিয়া বহন করে এবং এভাবে শেষ পর্যন্ত বন্য মশাদের প্রতিস্থাপন করে। এই দুটি কৌশলই বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে।

RK
আরও পড়ুন