ঢাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গত শুক্রবার স্তন ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে 'রাইজিং ফিয়ার' শীর্ষক এক অধিবেশনের ভাভএক অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। সচেতনামূলক এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স এবং গেটস ফাউন্ডেশন। অধিবেশনের পর পিঙ্ক ম্যান, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হসপিটালের সাবেক অধ্যাপক ও ক্যানসার এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান, বর্তমানে গণস্বাস্থ্য কমিউনিটিভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাস্কিনকে ক্যানসার সচেতনতায় অসাধারণ প্রচারণার জন্য পুরস্কৃত করা হয়।
এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম সংগঠকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর অক্টেবর পালিত হয়। এ সময় স্মরণ করা হয় সেসব অগুনতি নারীকে যারা এ রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন বা লড়াইয়ে হেরে গেছেন। অথচ এটি এমন এক ক্যানসার, যথাসময়ে শনাক্ত করা গেলে ও চিকিৎসা পেলে, যা সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। নারীদের যত ক্যানসার হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় স্তন ক্যানসার। ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৩ লাখ নারী এ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন ৬ লাখ ৭০ হাজার। স্তন ক্যানসার নিয়ে উন্নত দেশে পাঁচ বছর বেঁচে থাকার হার ৯০ শতাংশের বেশি। উন্নয়নশীল দেশে এই হার অনেক কম। এর মূল কারণ অসম স্বাস্থ্যসেবা, সময়মতো রোগ শনাক্ত না হওয়া এবং সবার সাধ্য ও নাগালে চিকিৎসা না থাকা।

বাংলাদেশে দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে মারা যান প্রায় ছয় হাজার। দেশে স্তন ক্যানসার প্রায়ই দেরিতে বা শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হয়, যার প্রধান কারণ নিয়মিত স্ক্রিনিং ও এ ক্যানসার নিয়ে সচেতনতার অভাব। পর্যাপ্ত ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় এবং চিকিৎসার ব্যয় অনেক বেশি হওয়ার কারণে অনেক রোগী সময়মতো ও যথাযথ চিকিৎসা পান না। স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে তা গুরুত্বসহকারে নিতে হবে। স্তনে বা বগলে শক্ত চাকা অনুভব হওয়া, স্তনের আকার বা আঙ্গিকে হঠাৎ পরিবর্তন, স্তনবৃন্ত অস্বাভাবিক রক্তাক্ত বা সেখান থেকে স্বচ্ছ তরল নিঃসরণ, স্তনের চামড়া কুঁচকে যাওয়া বা শক্ত হয়ে যাওয়া, স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া বা ব্যথা- এসব স্তন ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
