ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কোল্ড ড্রিংকস: কোমল পানীয় কিন্তু কোমল নয়

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:২২ এএম

গ্রীষ্মের দাপটে কোল্ড ড্রিঙ্কসে চুমুক না দিলেই নয়। পিকনিক, পার্টি বা দাওয়াত যাই বলুন না কেন, যে কোন অনুষ্ঠানে খাবারের পর কোল্ড ড্রিঙ্কস চাই-ই-চাই। ভূরিভোজ বা স্ন্যাকসের সঙ্গে আপনার প্রিয় কোমল পানীয় পান না করলে মনে হয় খাওয়াটা ঠিক জমলোনা। এমন যদি হয়,  তাহলে না জেনেই  নিজের শরীরের ক্ষতি করছেন। সত্যিকার অর্থে কোমল পানীয়, সোডা বা কোল্ড ড্রিঙ্কসগুলো শরীরের তো কোনো উপকার করেই না, বরং ওজন বাড়ানো থেকে শুরু করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি, হাঁপানি, লিভার এবং হৃৎপিণ্ডের সমস্যাসহ অকাল বার্ধক্যের কারণ হতে পারে। কোল্ড ড্রিঙ্কসের ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে নিন-

ওজন বৃদ্ধি : কোল্ড ড্রিঙ্কসে অতিরিক্ত চিনি থাকার ফলে এটি দ্রুত থেকে দ্রুততম উপায়ে শরীরে ওজন বৃদ্ধি করে। এক ক্যান কোকাকোলা-তে প্রায় ৮ টেবিল চামচ চিনি বিদ্যমান। কোল্ড ড্রিঙ্কস কিছু সময়ের জন্য ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও পেট ভরাতে পারে না। 

ফ্যাটি লিভার : লিভারে চর্বি থাকলে তা স্বাভাবিকভাবেই নিজের কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। কোল্ড ড্রিঙ্কসগুলোতে গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ- এ দুটি উপাদান বিদ্যমান। লিভোজেনেসিস নামে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লিভার মাত্রাতিরিক্ত ফ্রুক্টোজকে চর্বিতে পরিণত করে। ফলে লিভারে চর্বির অণুগুলো জমাট বাঁধে। ধাপে ধাপে এটি লিভারকে নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের দিকে পরিচালিত করে। লিভারে ফ্যাট জমলে সেখান থেকে পেটে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা পেতে কেবল কোল্ড ড্রিঙ্কস নয়- সফট ডিঙ্কস, স্পোর্টস ড্রিঙ্কস, এনার্জি ড্রিঙ্কস থেকে দূরে থাকুন।

ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা : ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে আপনাকে কোল্ড ড্রিঙ্কসকে ‘না’ বলতেই হবে। যে কোনো ধরণের পানীয়তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একটু গরমেই স্বস্তি আনতে কম বয়সীদের কোল্ড ড্রিঙ্কসে গলা ভেজাতে দেখা যায়। যার কারণে তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, নিয়মিত এক বোতল কোল্ড ড্রিঙ্কস পানে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বেড়ে যায়। তাছাড়া শরীরে চিনির পরিমাণ বাড়তি মানেই নানা অসুখের আনাগোনা। বিশেষজ্ঞগণ ৮ থেকে ৮০ প্রায় সব বয়সেই কোল্ড ড্রিঙ্কস না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।  

অস্বাস্থ্যকর উপাদান : কোল্ড ড্রিঙ্কসে খনিজ, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার বা ভিটামিনের কোনো উপাদান নেই। এটিকে নীরবঘাতকও বলতে পারেন। কোমল পানীয়তে ইথিলিন গ্লাইকল নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। আবার কোল্ড ড্রিঙ্কসগুলোতে সোডিয়াম সাইক্লামেট, স্যাকারিনসহ বিভিন্ন ধরণের কৃত্তিম রঙ মেশানো হয়। 

দাঁতের ক্ষয় : কোল্ড ড্রিঙ্কসে ফসফরিক অ্যাসিড এবং কার্বোনিক অ্যাসিড থাকায়, এটি দাঁতের এনামেলকে নষ্ট করতে পারে। অ্যাসিডের সঙ্গে চিনির সংমিশ্রণে মুখে ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয়। যা ক্যাভিটির কারণ হতে পারে। তাই কোল্ড ড্রিঙ্কসের পরিবর্তে ফলের রস, ডাব, লেবু পানি খেতে পারেন।

FI
আরও পড়ুন