জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামে আবু সালেহকে সভাপতি ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধানকে সদস্য সচিব করে ২৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে দেশের শীর্ষ স্থানীয় সাংবাদিক নেতাদের সমন্বয়ে সভা থেকে কমিটি গঠন করা হয়।
জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আবু সালেহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মহিউদ্দিন খান, কবি মাহমুদ সফিক, শামসুদ্দিন হারুন, সিনিয়র সাংবাদিক নির্মল চন্দ্র চক্রবর্তী, শামসুল হক দুররানী, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বুলবুল আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার মাহমুদ, আজহার আলী সরকার, ঢাকা সাব এডিটর কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য নাজমুল হাসান, বিএফইউজের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান আসাদ, সিনিয়র সাংবাদিক এ জেড এম খায়রুজ্জামান, জহিরুল হক রানা, মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তাদির অনিক, কামরুল হাসান দর্পন, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, জেসমিন আক্তার জুই, আব্দুল হালিম, শেখ আনোয়ার, মীর হোসেন মিরু, আমিরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন সিদ্দিকী, মাহমুদুল হাসান বিপ্লব সিকদার, এ এইচ এম জামাল উদ্দিন, জাকির হোসেন মাঝি, শেখ মো. তাজুল ইসলাম, মর্তুজা টিপু প্রমুখ।
জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের কমিটি ঘোষণা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শওকত মাহমুদ বলেন, জাতীয়তাবাদী ফোরাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। এই ফোরামের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক নেতা গিয়াস কামাল চৌধুরী, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আমানুল্লাহ কবির, জহিরুল হক, মোজাম্মেল হক ও রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদী নির্যাতনে চলেছে, দলের লাখো নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয়েছে, মামলার শিকার ও শত শত নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। আমার বিরুদ্ধে ৭৬টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আমাকে বাসায় এসে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে ‘আমি জেলখানায় যাবো না নির্বাচনে যাবো’। আওয়ামী দুঃশাসনে সাংবাদিক সমাজকে স্তব্ধ করতে আমাকে মামলা দিয়ে জেলখানায় বন্দি রাখা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে আইয়ুব খানের ওয়েজবোর্ড ভালো ছিল। কিন্তু সাংবাদিকরা তার এই সুযোগ-সুবিধাকে প্রত্যাখ্যান করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। জাতীয় প্রেসক্লাব-এর সংবিধানও সাংবাদিকদের অধিকারে কোনো বিষয়ে আমরা আপস করব না। প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র এসব বিষয় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও দেশে হাজার হাজার সাংবাদিক তাদের কথা বলার অধিকার থেকে বঞ্চিত। জাতীয়তাবাদী চেতনার সাংবাদিকরা এখনও বেকার, তাদের চাকরি এখনও ফেরত দেয়া হয়নি।
আমাদের ৬টি দাবি-
১. জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যযোগ্য লোককে নিতে হবে।
২. ডিইউজের সদস্য তালিকা থেকে সাংবাদিক পরিচয়ধারী অসাংবাদিকদের সদস্যপদ বাতিল করতে হবে।
৩. জাতীয় প্রেসক্লাবকে গঠনতন্ত্র মোতাবেক চলতে হবে।
৪. জাতীয় প্রেসক্লাব নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত করতে হবে।
৫. বিএফইউজের গঠতন্ত্র মোতাবেক সংগঠনটি পরিচালিত করতে হবে।
৬. সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের নিয়োগ অতিদ্রুত কার্যকর না করলে আমরা ওই প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করতে বাধ্য হবো। সাংবাদিকদের আর বেকার দেখতে চাই না, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সকল কালা কানুন বাতিল করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্তে সাংবাদিকদের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
সাংবাদিক কবি মাহমুদ শফি বলেন, স্বৈরাচার আমলে শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে ৭৬টি মামলা দিয়ে জেলখানায় বন্দি করা হয়েছিল। আমরা জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম বিগত ১৭ বছরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।
আলোচনা সভা শেষে ২৩১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। আলোচনা সভার শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য মুজিবুর রহমান সরকার। জাতীয় প্রেসক্লাব বিএফইউজে ও ডিইউজের নিহত সাংবাদিক ও জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ ছাত্র-জনতার রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
