নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পাঠ্যসূচিতে সত্য ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। অতীতে ইতিহাস বিকৃতির যে মহোৎসব চলছিল তা থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি। তরুণ প্রজন্মকে সত্য ইতিহাস জেনে সামনে এগোতে হবে। নতুন পথ রচনা করতে হবে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের অনেক ছবক আমরা বিভিন্ন জায়গায় থেকে শুনি। এই দেশের মানুষ মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। যারা ছবক দিতে আসেন তাদের কারোই অতো ত্যাগের ইতিহাস নেই। তাদের কণ্ঠ ১৯৭১ এ তো মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে ছিল।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৪ এর ২১ আগস্টে ১৯৭৫ এর অসমাপ্ত কাজ করার জন্য সেই ঘাতকরা শুধু শেখ হাসিনা নয়, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে মাসের পর মাস দেশে হত্যা ধর্ষণের যে ভয়াবহতা আমরা দেখেছি, তাদের কোনো মানাবধিকার ছিল না। মানবাধিকার শুধু আছে যুদ্ধাপরাধ যারা করেছে তাদের।
আলোচকের বক্তব্যে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, দেশের গণতন্ত্র চর্চার প্রধান অন্তরায় বিএনপি ও জামায়াত। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়, পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠন করে যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদকে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বাঙালির হাজার বছরের পথচলায় ছিল নিষ্পেষণ ও নির্যাতন। কিন্তু বাঙালির মুক্তির একটা আশা, প্রত্যাশার আস্বাদন ছিল। সেই মুক্তির পথ খুঁজেছে মানুষ। সেই পথের যে দিশা দেবেন সেই মানুষটির জন্মের জন্য হাজার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে নিপীড়িত বাঙালিকে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় নিভৃত পল্লীতে যার জন্ম হয়েছে। চোখে সমস্যা ছিল। কিন্তু অসম্ভব প্রতিভাবান পারিবারিক ঐতিহ্যে বেড়ে ওঠেন তিনি। পড়াশোনা করে একটি নিজস্ব ধীশক্তি অর্জন করে অসাম্প্রদায়িকতার ঘ্রানে সমৃদ্ধ হয়ে অতঃপর প্রস্তুতি নিলেন রাজনীতির মহাকাব্য রচনার। আর তাঁর বুকে বেঁধে থাকা অদম্য স্পৃহায় একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি।
আলোচনা সভার শুরুতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
