ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন ও কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। একইদিন পটুয়াখালী, বরগুনা, মুন্সীগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ এবং উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।
শনিবার (৯ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির বাইরে তিনটি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন, পৌরসভার শূন্য পদে উপনির্বাচন ১৫টি, ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ১৩টি, ইউনিয়ন পরিষদের শূন্য পদে উপ-নির্বাচন ১৯০টি, জেলা পরিষদে শূন্য পদে সাতটি উপ-নির্বাচনে লড়ছেন প্রার্থীরা।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর এটাই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বড় ধরনের ভোটের আয়োজন। স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবার নজর দুই সিটি নির্বাচনে। ভোট উৎসবমুখর করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দুই সিটিতেই ভোট হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন- ইভিএমে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মতো দুই সিটি নির্বাচনেও কোনো প্রার্থী দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে মেয়র পদে উন্মুক্ত লড়াই হচ্ছে। ময়মনসিংহ সিটিতে মেয়র পদে প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী মাত্র একজন। তিনি জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল, লাঙ্গল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অন্য চার প্রার্থী সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন। তাঁদের মধ্যে টেবিল ঘড়ি নিয়ে লড়াইয়ে আছেন সদ্য সাবেক মেয়র ইকরামুল হক, ঘোড়া প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, হাতি মার্কায় জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাদেকুল হক খান মিল্কী এবং হরিণ প্রতীক নিয়ে কৃষক লীগের সাবেক সদস্য রেজাউল হক রেজা। এবারও ইকরামুলের সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।
মেয়র পদ ছাড়াও ময়নসিংহ সিটিতে ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৯ জন ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কমিশনার পদে ৬৯ জন লড়ছেন। এই সিটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৩ হাজার ৮৭২, নারী ভোটার ১ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ এবং হিজড়া ৯ জন। ভোটকেন্দ্র ১২৮টি ও ভোটকক্ষ ৯৯০টি।
২০২২ সালের ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর ১৮ ডিসেম্বর মেয়রের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।
এই সিটিতে মেয়র পদে উপনির্বাচনে লড়ছেন চার প্রার্থী। এর মধ্যে ঘড়ি প্রতীকে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, ঘোড়া প্রতীকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন কায়সার, বাস প্রতীকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসীন বাহার সূচনা ও হাতি প্রতীকে মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, মূল লড়াইটা হবে মনিরুল হক ও তাহসীন বাহারের মধ্যে। মনিরুল আগে প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হন। সবশেষবার অল্প ভোটে হেরে যান। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হলেও দলটির তৃণমূলে তার শক্ত অবস্থান আছে। অন্যদিকে, তাহসীন বাহারকে প্রথম ভোটের ময়দানে দেখা গেলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থন রয়েছে তার প্রতি। তার বাবা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
কুমিল্লা সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ১৮২, নারী ভোটার এক লাখ ২৪ হাজার ২৭৪ এবং হিজড়া ২ জন। ভোটকেন্দ্র ১০৫টি ও ভোটকক্ষ ৬৪০টি।
