ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

‘ঈদে মহাসড়কে ছয়দিন কোনো ট্রাক-লরি চলবে না’

আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ০৫:০০ পিএম

ঈদুল আজহার আনন্দ যেন দুর্ভোগে পরিণত না হয়- এ লক্ষ্যেই সরকার এবারের ঈদে একটি সময়োপযোগী, সুপরিকল্পিত ও কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ঈদের আগে ও পরে মোট ছয় দিন দেশের মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যাত্রীসাধারণের নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাত্রা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

সোমবার (১২ মে) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ প্রস্তুতি বিষয়ক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন, অর্থাৎ মোট ছয় দিন- এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এ সময় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরি ইত্যাদি ভারী যানবাহন মহাসড়কে চলাচল করতে পারবে না।

এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিছু জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে, যেমন: কোরবানির পশুবাহী যান, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য পরিবহনকারী গাড়ি, পচনশীল দ্রব্য (যেমন: দুধ, ফলমূল, গার্মেন্টস পণ্য পরিবহন, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী, সার ও জ্বালানিবাহী গাড়ি।

উপদেষ্টা বলেন, এই যানবাহনগুলো দেশের খাদ্যনিরাপত্তা, শিল্প উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তাই এগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে না।

প্রতি বছর ঈদ সামনে রেখে মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ পশুর হাট যাত্রাপথকে করে তোলে দুর্বিষহ। এ বিষয়ে সরকার এবার কঠোর অবস্থানে।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, সড়কের পাশে বা ওপর কোনো অবস্থাতেই পশুর হাট বসতে দেওয়া হবে না। হাটের নির্ধারিত সীমা নির্ধারণ করে কঠোর মনিটরিং করা হবে।

ঈদ যাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, চাঁদাবাজি ও পরিবহন বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ, বিআরটিএ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা যৌথভাবে মনিটরিং টিম গঠন করবে।

‘যাত্রীদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিটি টার্মিনালে নজরদারি বাড়াচ্ছি,’ বলেন উপদেষ্টা।

সড়কের উপর চাপ কমাতে ও যাত্রীদের বিকল্প পরিবহন নিশ্চিত করতে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ট্রেন ও কোচ সংযোজনের পরিকল্পনা নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

গত রোজার ঈদের সফল অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারও দুর্ঘটনাবিহীন ঈদযাত্রার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানান উপদেষ্টা।

পশুর হাটে ছিনতাই, প্রতারণা বা জাল টাকার ভয় দূর করতে হাট সংলগ্ন এলাকায় ব্যাংকের বুথ ও ক্যাশ পয়েন্ট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে নগদ বহন না করে ডিজিটাল মাধ্যমে নিরাপদ লেনদেন সম্ভব হবে।

ঈদে যাত্রী ও পশুবাহী যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচল, সুশৃঙ্খল হাট ব্যবস্থাপনা এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার একাধিক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই, এবারের ঈদ হবে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ও দুর্ঘটনামুক্ত। জনগণের সহায়তা ও সচেতনতা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।’

 

Raj/FJ
আরও পড়ুন