ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

যুক্তরাষ্ট্রের জরিপ

বেশি প্রশংসা প্রত্যাশা করেন জেন-জি কর্মীরা

আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৬ এএম

কর্মক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের কর্মীদের নিয়ে হইচই কম হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক জরিপগুলো দেখাচ্ছে, জেনারেশন জেড (জেন-জি), অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের পর জন্ম নেওয়া কর্মীরা অন্য প্রজন্মের তুলনায় বেশি প্রশংসা ও স্বীকৃতি প্রত্যাশা করেন। এই প্রবণতা বাংলাদেশের করপোরেট অফিস, স্টার্টআপ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্যও নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

রিজিউম টেম্পলেট নামক প্রতিষ্ঠানের জরিপে যুক্তরাষ্ট্রের ১,০৫০ জন ম্যানেজারের অভিজ্ঞতা জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশ বলেছেন, জেন–জি কর্মীরা অন্যদের তুলনায় বেশি স্বীকৃতি চান। ৭১ শতাংশ মনে করেন, নিত্যদিনের সাধারণ কাজ করলেও জেন–জি কর্মীরা প্রশংসা প্রত্যাশা করেন। এমনকি ৫৮ শতাংশ ম্যানেজারের অভিজ্ঞতা, দায়িত্ব পুরোপুরি পালন না করলেও জেন–জি ইতিবাচক মন্তব্য শুনতে আগ্রহী।

তবে সবসময় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া খোঁজা খারাপ বিষয় নয়। জরিপে দেখা গেছে, ১০ জনের মধ্যে ৬ জন ম্যানেজার জানিয়েছেন, প্রশংসা ও স্বীকৃতি পেলে জেন–জি কর্মীদের কাজের মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়। অন্যদিকে, সবসময় প্রশংসা দিতে দিতে ম্যানেজারদের জন্য এটি মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

একই জরিপে দেখা গেছে, ৩৮ শতাংশ ম্যানেজার জানিয়েছেন, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পরদিনই জেন-জি কর্মীরা অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিয়েছেন। ২৭ শতাংশ বলেছেন, প্রতিক্রিয়ার পর কেউ কেউ সরাসরি চাকরি ছেড়েছেন। এমন সংবেদনশীল পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে প্রায় ১৮ শতাংশ ম্যানেজার নিজেরাও চাকরি ছাড়ার কথা ভেবেছেন।

ইন্টিলিজেন্ট ডটকমের আরও একটি জরিপে দেখা গেছে, দুই-তৃতীয়াংশ ম্যানেজার জেন-জি কর্মীদের জন্য তাদের ব্যবস্থাপনার ধরন পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। ৭৫ শতাংশ মনে করেন, তাঁদের সামলাতে বাড়তি সময় ও সম্পদ ব্যয় হয়। ৫০ শতাংশ বলেছেন, জেন-জি কর্মীরা অন্য প্রজন্মের সঙ্গে টানাপোড়েন তৈরি করেন। ২৭ শতাংশ ম্যানেজার সুযোগ পেলে জেন-জি কর্মী নিয়োগ দিতে চাইবেন না, এবং অর্ধেক ম্যানেজার ইতিমধ্যে কমপক্ষে একজন জেন-জি কর্মী ছাঁটাই করেছেন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, করপোরেট অফিস, স্টার্টআপ এবং বেসরকারি সংস্থায় দ্রুত বেড়েই চলেছে জেন-জি কর্মী। তারা খোলামেলা যোগাযোগ, নিয়মিত ফিডব্যাক এবং কাজের স্বীকৃতি চায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি নেতিবাচক বিষয় নয়। বরং এটি হতে পারে কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ার সুযোগ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডিজিটাল উদ্যোক্তা স্টিভ মরিস বলেন, জেন-জি প্রশংসার জন্য ব্যাকুল নয় তারা প্রতিক্রিয়া চায় যাতে নিজেদের উন্নত করতে পারে।

বিশ্বব্যাপী কর্মক্ষেত্রে জেনারেশন জেডের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে তারা বিশ্বব্যাপী কর্মক্ষেত্রের প্রায় ৩০ শতাংশ দখল করবে। তাই এই প্রজন্মকে শুধু সবসময় প্রশংসা চায় বলে আঙুল তোলার বদলে নতুনভাবে বুঝে, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্মক্ষেত্রকে আরও সহানুভূতিশীল, যোগাযোগনির্ভর এবং উৎপাদনশীল করে তোলা সম্ভব।

NB/SN
আরও পড়ুন