ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষরে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে দুই দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, এই উদ্যোগে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক এক বৈঠকে ভুটানি প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাব দেন।
তোবগে বলেন, ভুটানের ‘গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি (GMC)’ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে উভয় দেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
অধ্যাপক ইউনূস ভুটানের এই আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভুটান উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।’ তিনি উভয় দেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সম্ভাবনাগুলো অনুসন্ধান করার আহ্বান জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে বৈঠকে বলেন, তার সরকার ধর্মীয় পর্যটন প্রসারে কাজ করছে এবং এ খাতে বাংলাদেশি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভুটান সফরকে উৎসাহিত করা হবে, যা দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংযোগ আরও দৃঢ় করবে।
এছাড়া তিনি জানান, ভুটান তার জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে বাংলাদেশের জন্য কাজে লাগাতে চায়। একই সঙ্গে ভুটানের ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত তার সরকার। তিনি ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনেও বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন।
দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তাঁর দেশ অংশ নেবে এবং এই সংকটে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে মত প্রকাশ করবে।
তোবগে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন সঠিক নেতৃত্বে রয়েছে।’ তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে ‘আদর্শ’ ও ‘মাই প্রফেসর’ বলে অভিহিত করে শ্রদ্ধা জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি থিম্পুতে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশারও প্রশংসা করেন, যা ‘হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর’ থিমে নির্মিত হয়েছে।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তোবগে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, তিনি সম্ভবত আগামী ফেব্রুয়ারিতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফর করতে পারেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়ার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ
জবাবদিহিতা ছাড়া যে কোনো উন্নয়ন ক্ষণস্থায়ী ও ভঙ্গুর: প্রধান উপদেষ্টা