ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ঐক্য করতে গিয়ে যাতে আবারও নতুন বাকশাল না হয় : মঈন খান

‘হাজার হাজার জীবনের বিনিময়ে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে দেশ থেকে হটানো হয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে, দেশে গণতন্ত্র ফেরত এসেছে। এই সত্যকে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’

আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ঐক্য করতে গিয়ে যদি আবার বাকশাল করে ফেলি, তাহলে কিন্তু সেই ঐক্য কাজ হবে না। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, ঐক্য যেন বাকশালে রূপান্তর না হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশের নদী-পানির অধিকার আন্দোলনের পুরোধা, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির নেতা আতিকুর রহমান সালুর স্মরণে’ আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি এ সভার আয়োজন করে।

জাতীয় ঐক্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈঠক নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ঐক্য অবশ্যই প্রয়োজন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে। এতে কারো কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। কিন্তু এই প্রশ্নে সতর্ক করে দিতে চাই, ইংরেজিতে একটা কথা আছে- ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি। আমরা ঐক্য করতে গিয়ে যদি আবার বাকশাল করে ফেলি, তাহলে কিন্তু সেই ঐক্যে কাজ হবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ডেমোক্রেসি মুখে বলা সহজ কিন্তু বাস্তবে রূপদান করা কিন্তু এত সহজ না।’

মঈন খান বলেন, ‘আপনারা নতুন প্রজন্মের কথা বলেন। কোথায় নতুন প্রজন্ম? বিগত ১৫-২০ বছর বা দুই দশক ধরে আমাদের নতুন প্রজন্মের কেউ ভোট দিতে পেরেছে? পারেনি তো।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে সংস্কারের কথা বলছেন খুব ভালো কথা। সংস্কার তো লাগবেই। কিছু মনে করবেন না, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দেই, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত না নিজেরা নিজেদের সংস্কার না করবো, ততক্ষণ কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না।’

ম‌ঈন খান বলেন, ‘একটি নাম আতিকুর রহমান সালু, একটি প্রতিবাদ আতিকুর রহমান সালু।... এই মানুষটিকে কেন এতদিন আমরা স্মরণ করিনি। আজ তার মৃত্যুর এক বছর পর আমরা এখানে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। দি ডেমোক্রেটিক গভর্নমেন্ট অব ইস্ট বেঙ্গলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন সালু। ইতিহাস সবসময় মানুষের ওপর সুবিচার করে না।পরবর্তী জীবনে তিনি নতুন করে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ২০০৫ সালের ৫ মে দ্বিতীয় ফারাক্কা লংমার্চ করেছিলেন। তার সমগ্র জীবন আবর্তিত হয়েছে এই দেশের কল্যাণে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা ও ভোট দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অর্থ, বিত্ত, বৈভব ও ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষাকে ছাড়িয়ে যায়।... প্রায় দুই দশক ধরে আমাদের নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। এটাই সত্য। দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশের নেতারা সেই সত্যে বিশ্বাস না করে অর্থ, বিত্ত, বৈভব, ক্ষমতা, অবস্থান (পজিশন), মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট - এগুলোর পেছনে ছুটি।’

মঈন খান বলেন, ‘হাজার হাজার জীবনের বিনিময়ে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে দেশ থেকে হটানো হয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় যে, দেশে গণতন্ত্র ফেরত এসেছে। এই সত্যকে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।’

স্মরণসভায় আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আইএফসি সভাপতি অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমেদ, আইএফসি চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া প্রমুখ।

WA
আরও পড়ুন