বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র সিনথিয়া জাহিন আয়েশা বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় এবং দেশটি একদিন বিশ্বের অন্যতম রোল মডেল হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব গতিতে চলবে- এমন একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায় লড়াই চলছে।
দৈনিক খবর সংযোগের ধারাবাহিক আয়োজন ‘আড্ডা সংযোগ’-এ এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার এই প্রত্যাশার কথা জানান।
তিনি বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে জনগণের প্রত্যাশা ছিল বৃহৎ। এক দফা ঘোষণার সময় শুধু হাসিনার পতন নয়, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর পতনও চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের লড়াই শুধু হাসিনা বনাম ছাত্র-জনতার ছিল না, বরং যারা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধেও। হাসিনাকে বিতাড়িত করলেও যারা তাকে তৈরি করেছে, তাদের সরানো যায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো এই দায় এড়াতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায় আরও বেশি, কারণ এই প্ল্যাটফর্মের ডাকেই মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লড়াই চলছে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার, শাপলা চত্বর, বিডিআর হত্যা এবং গুম-খুনের ঘটনাগুলোর বিচার জনগণের প্রত্যাশা হলেও তা বাস্তবায়নে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। জুলাই ঘোষণাপত্রে ৪৭-এর উল্লেখ না থাকা এবং কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট উপেক্ষিত হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ইউনূস সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের যে গতি ছিল তা অধিকাংশ উপদেষ্টার মধ্যে নেই।’
২৪-পরবর্তী সময়ে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় সরকারের উদ্যোগ অনুপস্থিত বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার মতে, আন্দোলন পরবর্তী অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে আহত ও শহীদদের নিয়ে কাজ করা এবং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে আগামীর বাংলাদেশ গড়া।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবে পরিচালিত কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের ধারা প্রভাবিত নই। প্রয়োজনে অন্যান্য রাজনৈতিক বা সামাজিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময় করি, কিন্তু আমরা নিজেদের গতিতে চলি।’
সংগঠনের অর্থায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে কোনো অফিস নেই, টিএসসি বা জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, এবং খরচ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে বহন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ফান্ড সংগ্রহের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে সিনথিয়া জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান কাজ আহত ও শহীদদের নিয়ে কাজ করা বলেই তারা আপাতত এ বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছেন না।
