ইকামত আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে কোনো কিছু প্রতিষ্ঠা করা। শরিয়ত অনুমোদিত বাক্যমালা দ্বারা নামাজের সূচনা হওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে ইকামত বলা হয়। ইকামতকে দ্বিতীয় আজানও বলা হয়ে থাকে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ জুমা ও দুই ঈদের নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া ফরজে কেফায়া। একাকী বা জামাতে আদায়কৃত নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া সুন্নত। এমনকি দ্বিতীয় জামাতের নামাজেও ইকামত দেওয়া উচিত। (লিসানুল আরব, ১১/৩৫২)
আজানের মতো ইকামতের শব্দ বা বাক্যমালার ব্যাপারে দুটি বর্ণনা রয়েছে। বেলাল (রা.) প্রদত্ত যে আজানে বাক্যসংখ্যা ১৫টি, সে ইকামতের বাক্যসংখ্যা ১১টি। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৯)
আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘বেলাল (রা.)-কে আজানের বাক্যমালা জোড় এবং ‘কদ ক মাতিস সালাহ’ ছাড়া ইকামতের বাকি বাক্যগুলো বিজোড় বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৫; মুসলিম, হাদিস: ৭২৪)। এ হাদিসের নির্দেশনামতে ইকামতের বাক্যমালা এমন-
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
হাইয়া আলাস সালাহ
হাইয়া আলাল ফালাহ
কদ ক মাতিস সালাহ
কদ ক মাতিস সালাহ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আবু মাহজুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আজানের বাক্যমালা ছিল ১৯টি আর ইকামতের বাক্যমালা ছিল ১৭টি। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে এমনটাই শিখিয়েছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫০০, ৫০২)। এ হাদিসের নির্দেশনামতে ইকামতের বাক্যমালা এমন-
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
হাইয়া আলাস সালাহ
হাইয়া আলাস সালাহ
হাইয়া আলাল ফালাহ
হাইয়া আলাল ফালাহ
কদ ক মাতিস সালাহ
কদ ক মাতিস সালাহ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
উভয় পদ্ধতির বাক্যমালা অনুসরণ করে ইকামত দেওয়া জায়েজ। তবে যদি কেউ আজানের ক্ষেত্রে বেলাল (রা.)-এর বাক্যমালা অনুসরণ করে ১৫ বাক্যে আজান দেয়, তা হলে সে ১১ বাক্যে ইকামত দেবেন। আর যদি কেউ মাহজুরা (রা.)-এর বাক্যমালা অনুসরণ করে ১৯ বাক্যে আজান দেন, তা হলে সে ১৭ বাক্যে ইকামত দেবেন।
ইকামতের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে মুয়াজ্জিন যখন যে বাক্য বলবেন উত্তরদাতা তখন সে বাক্য বলবেন। শুধু মুয়াজ্জিন যখন ‘কদ ক মাতিস সালাহ’ বলবেন; তখন বলতে হবে ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহাল্লাহ’।
আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘বেলাল (রা.) ইকামত দেওয়া শুরু করলেন। যখন তিনি ‘কদ ক মাতিস সালাহ’ পর্যন্ত পৌঁছলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহাল্লাহ’। এ ছাড়া অন্য সব বাক্যের জবাব আজানের মতো দিলেন।’ (আবু দাউদ, ১/৭৮)
