বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে এক নতুন বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মানবজাতি। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চালিত রোবটের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে। চীনের গুয়াংজু ভিত্তিক কাইওয়া টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর ঝাং কিফেং এবং তার গবেষক দল এমনই এক ‘প্রেগন্যান্সি রোবট’ তৈরি করছেন, যার পেটে থাকবে কৃত্রিম জরায়ু। এই জরায়ুর ভেতর ৯-১০ মাস ধরে মানব ভ্রূণ বড় হয়ে একসময় জন্ম নেবে নতুন প্রাণ।
চীনের সংবাদমাধ্যম চসুন বিজে-র বরাত দিয়ে জানা গেছে, রোবটটির গর্ভে পায়ের পাতার মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহ করা হবে, যাতে শিশুর বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়। এর ফলে যারা শারীরিক বা জৈবিক কারণে সন্তান ধারণে অক্ষম, তাদের জন্য এটি হতে পারে যুগান্তকারী সমাধান।
বর্তমানে, সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খরচ হয় প্রায় ১ থেকে ২ লাখ ডলার, সেখানে এই রোবটের মাধ্যমে সন্তান নিতে খরচ পড়বে আনুমানিক ১৪,০০০ ডলার (প্রায় ১,৭০১,০০০ টাকা)। এ কারণে অনেকেই এই প্রযুক্তিকে ভবিষ্যতের সাশ্রয়ী এবং কার্যকর বিকল্প হিসেবে দেখছেন।
তবে প্রশ্ন উঠছে নানা দিক নিয়ে।
- কীভাবে নিষিক্ত ডিম্বাণু রোবটের জরায়ুতে স্থাপন করা হবে?
- রোবট আসলে কীভাবে সন্তানের জন্ম দেবে?
- এর চিকিৎসা নিরাপত্তা ও নৈতিকতা কতটুকু গ্রহণযোগ্য?
এ নিয়ে এখনই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নীতিগত এবং নৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডক্টর ঝাং অবশ্য জানিয়েছেন, তারা গুয়াংডং প্রদেশের প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন এবং আইনগত কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়াও চলছে।
ডক্টর ঝাং বলেন, কৃত্রিম গর্ভের প্রযুক্তি ইতিমধ্যে পরিণত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন এই প্রযুক্তিকে রোবটের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চূড়ান্ত কাজ চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তি শুধু বন্ধ্যা দম্পতির নয়, ভবিষ্যতে মানবজাতির প্রজনন ব্যবস্থাকেই আমূল বদলে দিতে পারে।
বর্তমান বিশ্বের যেখানে হিউম্যানয়েড রোবট ইতিমধ্যেই সমাজে ঢুকে পড়েছে, সেখানে ‘প্রেগন্যান্সি রোবট’ নতুন করে প্রশ্ন তুলছে ভবিষ্যতে কি মানুষের আর গর্ভধারণ লাগবে না?
এখন প্রশ্ন একটাই বিজ্ঞান কি সত্যিই প্রকৃতিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে? না কি এটাই ভবিষ্যতের স্বাভাবিক পথ?
জাপানে নারীদের সঙ্গী এআই রোবট
চীনে এআই সম্মেলনে তাক লাগাচ্ছে রোবট