ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

নাটোরে সুপেয় ও সেচের পানির তীব্র সংকট

আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
দেশে চলমান তাপদাহে উত্তরের জেলা নাটোরে দেখা দিয়েছে সুপেয় ও সেচের পানির তীব্র সংকট। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় জেলার সাধারণ ও অগভীর অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। এতে এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাপদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাটোরের ৭টি উপজেলার বেশিরভাগ সাধারণ ও অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের বেশি নিচে নেমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে জেলার লালপুর, বাগাতিপাড়া ও সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায়। ফলে পানির প্রয়োজন মেটাতে এখন পাম্প, মডিফাইড ও সাবমারসিবল উপরই ভরসা সবার। ভরসা হলেও গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের এ ধরনের পাম্প কেনার সাধ্য নেই। ফলে পানির জন্য প্রতিবেশীদের বাড়ির শরণাপন্ন হতে হচ্ছে তাদের।
 
জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা বাগাতিপাড়ায় খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় পানির জন্য হাহাকার বেড়েছে সাধারণ মানুষের। দীর্ঘদিনের অনা বৃষ্টি ও তাপদাহে শুকিয়ে গেছে উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল ও মুসা খাঁ নদীও।
 
উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন‌ দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, গত বছরও শুষ্ক মৌসুমে উপজেলায় পানির সংকট দেখা দিয়েছিল। চলতি বছর এ সংকট আরও বেড়েছে।
 
তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের সাধারণ নলকূপ ও ইঞ্জিনচালিত অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে খাবার পানির যেমন সংকট দেখা দিয়েছে, তেমনি জমিতে সেচ দেওয়া, রান্না, গোসলসহ প্রতিদিনের অনেক কাজই ব্যহত হচ্ছে।
 
উপজেলার জামনগর গ্রামের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপ প্রবাহের আম ও লিচুর মুকুল ঝরে যাচ্ছে। স্যালো মেশিনেও পানি ওঠে না। আগে পাঁচ-ছয় ফুট গভীর তখন পানি পেতাম, কিন্তু এ সময় এমন পরিস্থিতি যে পানি আর ওঠে না। যাদের টাকা আছে বাধ্য হয়ে সাবমার্সবল পাম্প বসিয়ে কাজ‌ করছেন। এতে খরচও বেশি হচ্ছে।
 
সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন বলেন, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ টিউবওয়েলের (নলকূপ) পানি ব্যবহার করে। কিন্তু এবছর টিউবওয়েলে পানি ওঠছে না। পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। যদিও অনেক বাড়িতে পাম্প হওয়ার ফলে সেই জায়গা থেকে পানির চাহিদা মিটানো যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
 
এ বিষয়ে নাটোর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরূল কবির ভূঞা দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর বেশি নির্ভরশীল। কৃষি কাজের জন্য‌ এই অঞ্চলে ভূগর্ভস্থের প্রচুর পানি উত্তোলন করা হয়। এর কারণে শুস্ক মৌসুমে পানির লেয়ার আরও বেশি নিচে নেমে যায়। এ মৌসুমে পানির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার মানুষ। 
 
তিনি বলেন, পুরনো খুব কম সংখ্যক নলকূপে পানি ওঠছে এখন। তবে (তারা পাম্প) ও সাবমারসিবল পাম্পে পানি পাওয়া যাচ্ছে।
 
পানির সংকট নিরসনে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন বলেন,  সরকারিভাবে বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্পের মাধ্যমে সাবমারসিবল পাম্প বসানো হয়েছে, সেখানে মানুষ পানি পাচ্ছেন। সেইসঙ্গে সম্প্রতি বছরগুলোতে এনজিও গুলোর দেওয়া নলকূপগুলোতেও পানি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
HK/FI
আরও পড়ুন