বাংলাদেশের ক্রীড়া অঙ্গন সাম্প্রতিক সময়ে যে বিতর্কে আলোড়িত হয়েছে, তার উৎস এক মন্তব্য। ফুটবলকে কেন্দ্র করে বিসিবির পরিচালক ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বক্তব্যে উত্তাল। মাঠ ব্যবহারের জটিলতা থেকে শুরু করে ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তাঁর দাবি, আর সেই প্রেক্ষিতে মারপিট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে বলে দেওয়া হুমকিসূচক মন্তব্য মুহূর্তেই সমালোচনার আগুন জ্বালায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় প্রবল প্রতিক্রিয়া, যার ঢেউ ফুটবলার থেকে সংগঠক এবং সাধারণ দর্শক-সবাইকে স্পর্শ করে।
পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠায় বিসিবিকে। প্রয়োজন হলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কথাও জানানো হয়। এমন উত্তেজনার মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তাঁর মধ্যস্থতায় দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিকতার দিকে ফিরে আসে। এই প্রেক্ষাপটেই আসিফ আকবর অবশেষে খুলে বললেন নিজের অবস্থান এবং ফুটবলভক্তদের কাছে প্রকাশ করলেন দুঃখ।
ফেসবুক লাইভে আসিফ জানান, তার মন্তব্যে ফুটবল দর্শকদের কষ্ট হয়েছে, এবং সেটি তিনি স্বীকারও করছেন। তার ব্যাখ্যায় উঠে এসেছে ভিন্ন এক দৃষ্টিভঙ্গি-বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে একটু কঠোর শব্দ ব্যবহার করেছিলেন, যাতে বিষয়টি আলোচনার টেবিলে উঠে আসে। তার যুক্তি, মাঠসংক্রান্ত ইস্যুতে দুই ক্রীড়া সংস্থার সমন্বয়ের অভাব বহুদিন ধরে চলমান, এবং তিনি চেয়েছিলেন এই অচলাবস্থা প্রকাশ্যে আলোচিত হোক।
তিনি বলেন, ‘এই স্লেজিংটা করতে গিয়ে আমি ফুটবল দর্শকদের কষ্ট দিয়েছি। এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছি। এজন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করেছি। যারা ফুটবল ভালোবাসেন এবং ফুটবল ভালোবেসে আমাকে বকাবকি করেছেন, রাগ করেছেন, এতে আমি কিছু মনে করিনি। মনে করার কোনো কারণও নেই। আমি চাচ্ছিলাম এটা নিয়ে একটা আলোচনা হোক।’
তবে তার কথাই আবার বলে, যে পদ্ধতিতে তিনি বিষয়টি তুলেছেন, তা মানুষকে কষ্ট দিতে পারে, তাই তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। ফুটবলভক্তদের রাগ, অভিমান বা সমালোচনাকে তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ বলে মনে করেননি বলেও উল্লেখ করেন।
আসিফ বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে এবং দুই বোর্ডের প্রধান ক্লোজ হয়েছেন। গত ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে জাতীয় স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সৌহার্দ্যপুর্ণ আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি সমাধানে এসেছি যে, আমরা কিভাবে ফুটবল–ক্রিকেট একসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারি। আমি আবারও ফুটবল ভক্তদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি।’
এদিকে, দুই বোর্ডপ্রধানের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকে তিনি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন। গত ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ–নেপাল ম্যাচ দেখতে জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি। সেই সুযোগে বাফুফে সভাপতি এবং বিসিবি প্রধান সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেন।
