ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনে সকালের শান্ত ক্রিকেটীয় পরিবেশ আচমকাই ভেঙে দেয় এক অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক ঘটনা। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে সারা দেশজুড়ে অনুভূত হয় তীব্র ভূমিকম্প, যার কেন্দ্র ছিল নরসিংদীর কালিগঞ্জের কাছাকাছি।
খেলায় তখন আয়ারল্যান্ডের ডোহানি ও হ্যারি টেক্টর স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করে যাচ্ছিলেন, আর বাংলাদেশ লিডকে আরও ভারী করতে অপেক্ষা করছিল তাদের জুটি ভাঙার। ঠিক সেই সময় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রেসবক্স হঠাৎ দুলতে শুরু করে।
প্রথমে কেউই পরিস্থিতি বুঝে উঠতে পারেননি, তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উপস্থিত সবাই টের পান-এটা ভূমিকম্প। মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা। সাংবাদিকরা পাঁচতলা প্রেসবক্স থেকে দ্রুত নিচে নেমে আসেন, দর্শকেরা দোতলা গ্যালারি থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে থাকেন।
মাঠেও তখন ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান ও এইড রেইনসফোর্ডকে নিচে উদ্বেগমাখা চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্সও পরে জানান, ড্রেসিংরুমে থাকা সবার মধ্যেই ভয় তৈরি হয়েছিল। আয়ারল্যান্ডের কয়েকজন খেলোয়াড় নিরাপদ জায়গার খোঁজে মাঠে চলে আসেন। তিন মিনিটের জন্য খেলা বন্ধ থাকে, কিন্তু সৌভাগ্যবশত বড় কোনো ক্ষতি না হওয়ায় কিছুক্ষণ পরই ম্যাচ আবার শুরু হয়।
খেলা পুনরায় শুরুর পর মাঠের চিত্র পাল্টে যায়। সকাল থেকে শক্ত হয়ে থাকা আয়ারল্যান্ডের ডোহানি-টেক্টর জুটি ভূমিকম্পের বিরতির পর আর টিকতে পারেনি। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে এক ওভারের ব্যবধানে দুই ব্যাটারই ফিরে যান। ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই আয়ারল্যান্ডের ইনিংস আরও চাপে পড়ে।
লাঞ্চের সময় তাদের স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ২১১, যেখানে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের লিড তখনও বিশাল, ২৬৫ রান। তাইজুল তিনটি উইকেট নিয়ে সেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
