সাম্রাজ্যবাদ আগ্রাসনের প্রভাবে বিশ্ব জুড়ে চলছে সামরিক অস্ত্রের মহড়া। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সৃষ্ট যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ ব্যবহৃত অস্ত্রের নাম বোমা। কয়েক শতাব্দী ধরে পৃথিবীতে ধ্বংসলীলায় ব্যবহৃত হচ্ছে বোমা নামের অস্ত্র। এটি ধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি এক ধরনের বিস্ফোরক। যা খুব দ্রুতবেগে অভ্যন্তরীণ শক্তির রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বড়ো ধরনের কম্পন তরঙ্গের সৃষ্টি করে ও বিস্ফোরণ ঘটায়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে চুর্ণ-বিচুর্ণ করে নিমিশেই।

উন্নত বিশ্বের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এখন অনেক অজানাই সহজে জেনে নিচ্ছে মানুষ। ফলে মহাবিশ্বের যুদ্ধরত দেশগুলোতে বিস্ফোরিত বোমার ভিডিও ও হতাহতের খবরাখবর জানা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ফলে বোমার কথা শুনলেই এখন আঁতকে ওঠে মানুষের হৃদয়। কেননা বোমা একটি ধ্বংসাত্মক রাসায়নিক অস্ত্র। তবে মন্দের ভালো বলেও কিছু আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে বোমার আঘাতে তেমনি সৃষ্টি হয়েছে এক মন্দের ভালো। যা মেক্সিকো নামের দেশটিতে এক অনন্য সুন্দর দর্শনীয় স্থান গড়ে তুলেছে। বলছি মেক্সিকোর হিডেন বিচের কথা।

মেক্সিকোর 'হিডেন বিচ' স্থানীয়দের কাছে 'প্লয়া দেল আমোর' বা ‘ভালোবাসার সৈকত’ বলেও পরিচিত। এটি মেক্সিকোর প্যাসিফিক মহাসাগরের মারিয়েটা দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত একটি বিশেষ ধরনের গহ্বর বা গুহা-সদৃশ সৈকত। উনিশ শতকের দিকে দেশটির সামরিক বাহিনীর মহড়ায় বিস্ফোরিত এক বোমার সৃষ্টি এই 'হিডেন বিচ'।

'হিডেন বিচ' একটি দুর্গম ও অত্যন্ত সংরক্ষিত স্থান। সেখানে যেতে হলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাঁতার কেটে একটি সরু টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এটি মেক্সিকোর ন্যাশনাল পার্ক হওয়ায় এখানে প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। 'হিডেন বিচ' দর্শনার্থীকে দেয় অনন্য এবং জাদুকরী অভিজ্ঞতা। এখানে স্ফটিক-স্বচ্ছ পানি, অনন্য শিলার গঠন এবং আশেপাশের গুহাগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

দেশবিদেশের অনেক যুগলের পছন্দের তালিকায় থাকা 'হিডেন বিচ' এমন এক সৈকত যা মানুষের কাছে প্রায় অদৃশ্য।
সেখানে পৌঁছাতে এক ঘণ্টার নৌকা ভ্রমণ করতে হয়। এরপর দ্বীপে অবতরণ করেও নিভৃত অঞ্চলে পৌঁছাতে আপনাকে সাঁতার কাটতে বা ডিঙি চালাতে হবে। নিজ চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না বোমা বিস্ফোরণও এমন চমৎকার দৃশ্যের জন্ম দিতে পারে!
