সন্তান জন্মানোর আগেই তার নাম কি হবে এই নিয়ে ভাবনা শুরু হয় পরিবারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পরিবারের অনেকেই সম্পর্ক অনুযায়ী দাবি করে বা আবদার জুড়ে দেয় নাম রাখবে বলে। এটি হয়ত অনাগত বা সদ্যজাত শিশুর প্রতি জড়িয়ে থাকা আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তবে পরিবারের বাইরের কেউ যদি অর্থের বিনিময়ে শিশুর নাম রাখেন সেটা একটু অবাক হওয়ার মতোই।
বাস্তবেও তেমনি সেবাইকে অবাক করে দিয়ে শিশুর নামকরণকে পেশায় পরিণত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের বাসিন্দা টেলর এ হামপ্রি। মা-বাবাকে নবজাতকের জন্য নাম খুঁজে পেতে সহায়তা করাই তার কাজ। বিনিময়ে তিনি নেন লাখ লাখ টাকা। কোনো শিশুর নাম খুঁজে দিতে হামপ্রি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত নেন, যা বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ লাখ।
নামের প্রতি হামপ্রির ভালোবাসা পুরোনো। এক দশক আগে তিনি শিশুদের নামকরণে অনলাইনে সেবা দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলে শিশুদের নাম রাখা নিয়ে প্রচার শুরু করেন। টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে বর্তমানে তার অনুসারীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তিনি পাঁচ শতাধিক শিশুর নাম রাখতে সহায়তা করেছেন।
গর্ভবতী নারীদের মানসিক ও শারীরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ আছে হামপ্রির। তা ছাড়া ব্র্যান্ডিং ও বিপণন নিয়েও তার অভিজ্ঞতা আছে। নামকরণের ব্যবসা করতে তাকে এসব বিষয় সহায়তা করেছে।
নবজাতকের মা–বাবার পছন্দ বুঝতে হামপ্রি তাদের অনেক ধরনের প্রশ্ন করেন। সাধারণ ই-মেইল নামের তালিকা দিয়ে পরামর্শ দিতে তিনি নেন ২০০ ডলার (প্রায় ২৪ হাজার টাকা)। আর পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজের জন্য নেন ৩০ হাজার ডলার। এই প্যাকেজে অন্যান্য কিছুর মধ্যে যে শিশুর নাম রাখা হবে, তার পারিবারিক ইতিহাস ঘেঁটে দেখা হয়।
শুধু নাম প্রস্তাব নয়, শিশুর নাম রাখা নিয়ে মা-বাবার মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিলে হামপ্রিকে অনেক সময় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করতে হয়। ধনী পরিবারের পাশাপাশি পরিচিত তারকারাও নবজাতকের নামকরণে তার দ্বারস্থ হন। ২০২১ সালে নিউইয়র্কার এ হামপ্রির প্রোফাইল ছাপানো হয়। এর পর থেকেই তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়।
হামপ্রিকে নিয়ে অনলাইনে কিছুটা সমালোচনাও হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করা হয়েছে, এমন আধেয়র (কনটেন্ট) মাধ্যমে প্রায় সময় মানুষ আমাকে খুঁজে পায়। তাই আমি এটা মেনে নিয়েছি। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, আমার কাজটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।’ সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক পোস্ট
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের নিদর্শন ‘টারকয়েজ আইস’
দর্শনীয় হলেও বিপজ্জনক ‘ফ্রোজেন বাবলস’